নন্দীগ্রাম: মতাদর্শ ভিন্ন। তবু রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের সঙ্গী। একটা সময় ছিল বিধানসভায় দু’জন একসঙ্গে বসেছেন। তর্ক-বিতর্ক করেছেন। পরে আবার ধূমপান করেছেন একসঙ্গে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে পুরনো কথা জানালেন তাঁর ‘সিগারেট ফ্রেন্ড’ তথা প্রাক্তন সাংসদ শিশির অধিকারী। বললেন, “ধুতি-পাঞ্জাবী পরা একজন খাঁটি ভদ্রলোক।”
তৎকালীন সময়ে এক সঙ্গে বিধানসভায় বসতেন তাঁরা। শিশির বললেন, “খুব কাছ থেকে ওনাকে দেখেছি। রাজনৈতিক কারণে আমাদের দু’জনের মধ্যে প্রায় বাদানুবাদ হত তবু আমাদের মধ্যে সিগারেটের বন্ধুত্ব অটুট ছিল।” সংযোজন করলেন,”বিধানসভায় ওনার আসন আর আমার আসন আড়াআড়ি ছিল। সেই কারণে উনি কী করছেন দেখতে পেতাম। যখন ওনার সিগারেট শেষ হয়ে যেত, তখন উনি হাত নাড়তেন। আর আমার যদি কোনও কারণে রাগ হত আমি ওনার দিকে তাকাতাম। আড় চোখে দেখতাম উনি হাত নেড়ে ইশারা করছেন। উঠে গিয়ে ওনাকে সিগারেট দিতাম। কখনো আমার সিগারেট শেষ হলে ওঁর কাছে সিগারেট চেয়ে নিতাম। আমি দামি সিগারেট খেলেও উনি চারমিনার খেতেন। বহুবার আমাদের মধ্যে প্রতিঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হলেও আমাদের মধ্যে ব্যক্তি সম্পর্কের কোনওদিন অবনতি হয়নি।”
শিশির বলেছেন, উনি কিছু বললে তাঁরা যেমন শুনতেন, আমরা কিছু বললে উনি শুনতেন। তবে উনি ওনার রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতেন। আমরাও আমাদের রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতাম। তবু আমাদের মধ্যে ব্যক্তি সম্পর্কের কোনও অবনতি হয়নি।
শিশিরের কথায়, “দুই বংলার সঙ্গে ওনার সম্পর্ক রয়েছে। একজন কর্মঠ মুখ্যমন্ত্রী । বয়সে আমার থেকে ছোট ছিলেন বুদ্ধদেব।” এরপরই প্রাক্তন সাংসদের বলেন, “নন্দীগ্রাম নিয়ে আমাদের খুব খারাপ সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে নন্দীগ্রামের ভৌগলিক অবস্থান ও মাটির উর্বর জমি নিয়ে ভুল বুঝিয়ে ছিলেন। সেকারণে উনি উর্বর জমিতে শিল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর এখন অনেকে শিল্পপতি সাজার চেষ্টা করছে। আমি জানি এরা কেউ শিল্পপতি নয়।”