নন্দীগ্রাম: পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসছে রাজ্যে। সময় যত গড়াচ্ছে ততই তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির বাতাবরণ। চলছে ঘুঁটি সাজানোর খেলা। সব রাজনৈতিক দলগুলিই তাদের নিজেদের মতো শুরু করেছে প্রচার অভিযান, জনসংযোগ কর্মসূচি। আর এবারের পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক দলের বাড়তি নজর পূর্ব মেদিনীপুরে (Purba Medinipur)। ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা ও ব্লক স্তরের মধ্যে সেতুবন্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষকে। আরও জোর দেওয়া হচ্ছে জনসংযোগে। এবার শুরু হল তৃণমূলের চাটাই বৈঠক। নন্দীগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় এই চাটাই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে বিজেপি শিবিরের মণ্ডল বৈঠককে পাল্টা দিতেই তৃণমূলের এই চাটাই বৈঠকের কর্মসূচি। কেমন এই চাটাই বৈঠক? স্থানীয়, ব্লক, জেলা এমনকী রাজ্য নেতৃত্বদের নিয়ে সরাসরি গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে ঘাসফুল শিবির। চাটাই পেতে বসে গ্রামবাসীদের অভাব অভিযোগের কথা শোনা হচ্ছে। বৈঠকগুলিতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, শাসক দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার স্থানীয় স্তরে কোথাও কোনও সমস্যা হলে সেগুলি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে চাটাই বৈঠকে। সব মিলিয়ে শাসক দল তৃণমূলের জনসংযোগের এই নতুন পন্থা ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে।
রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরে নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সামসাবাদ, ভেকুটিয়া এবং হরিপুরে এই চাটাই পেতে কর্মসূচি চালানো হয়। আগামী দিনেও গ্রামে গ্রামে এমন জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছে শাসক শিবির। যদিও বিষয়টি নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি পদ্ম শিবির। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন তৃণমূলের চাটাই বৈঠক প্রসঙ্গে বলেছেন, “নেতা গেলেই তো গো ব্যাক বলছে। বৈঠকটা কে করবে। এখন চাটাইয়ে বসছে, পরে খালি মাটিতে বসতে হবে।”
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহসভাপতি প্রলয় পাল বলেন, “কোটি কোটি টাকা চুরি করে নেতারা যখন চেয়ার দখল করছে, আর তখন কর্মীদের নিয়ে চাটাই বৈঠক – এটি তৃণমূল কর্মীরাই ভাল চোখে নিচ্ছে না। বিজেপিই এই চাটাই বৈঠক শুরু করেছিল। বিজেপিকে দেখে তৃণমূল অনুসরণ করছে, এটা ভাল বিষয়। কিন্তু যেভাবে নেতারা চুরি করে চেয়ার দখল করেছে, সেখানে চাটাই বৈঠক করে নন্দীগ্রামে তৃণমূল খুব একটা মাটি ধরতে পারবে না। আগামী পঞ্চায়েতে সেটি তাদের কর্মীরাই বুঝিয়ে দেবে।”