পূর্ব মেদিনীপুর: ২০২১ এর মহারণে (West Bengal Assembly Election 2021) এপিসেন্টার এবার নন্দীগ্রাম (Nandigram)। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ভোট ঘিরে বিক্ষিপ্ত অশান্তি হলেও বড় কোনও ঝামেলার ঘটনা দেখা যায়নি মমতা বনাম শুভেন্দুর এই ব্যাটেল ফিল্ডে। আর এর জন্য নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করতেই হয়। কিন্তু ভোট মিটতেই আক্রমণে এবং প্রতি আক্রমণে উত্তপ্ত হল নন্দীগ্রাম।
শনিবার তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে দফায় দফায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে। এদিন নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের ভেকুটিয়ায় বিজেপি কর্মীদের মারধর করে তৃণমূল বলে অভিযোগ। অপর দিকে তৃণমূল কর্মীদের উপর এদিন পাল্টা হামলা চালায় বিজেপি বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় দুই পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে খবর। বিজেপির একাধিক আহত কর্মীকে রেয়া পাড়া ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। উল্টো দিকে তৃণমূলেরও আহত একাধিক কর্মী নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে খবর। এদিনের ঘটনার পর পুলিশ বাড়তি নজর দিয়েছে ওই এলাকাগুলিতে। নজরদারীতে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।
নন্দীগ্রাম ২১০ নম্বর বিধানসভার ২৭ নম্বর বুথ এলাকায় এক বাসিন্দা নিজেকে সক্রিয় বিজেপি কর্মী বলে দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। এমনকী তাঁর বৃদ্ধা মা, ছেলে এবং স্ত্রীকেও মারধর করা হয়েছে। আর এক বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় বাজার থেকে তাঁকে টেনে এনে মারধর করা হয়। এছাড়া বিজেপি করার ‘অপরাধে’ বহু কর্মী হুমকি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, এই ভেকুটিয়া এলাকায় ভোটের দিন সকালে এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ক্রমাগত শাসক দলের হুমকিতে মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টে বিজেপির দিকেই হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ করেছে। ঘাসফুল শিবিরও দাবি করেছে তাদের একাধিক কর্মী চোট-আঘাত নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানানো হয়েছে। এক কর্মীর অভিযোগ, তৃণমূল করার জন্য তাঁকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয় বিজেপির কয়েকজন কর্মী। এখন শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মমতার সভায় ষাঁড়ের প্রবেশ, তারপর যা ঘটল হাড়ে হাড়ে টের পেল পুলিশ
অর্থাৎ, ভোটপর্ব ভালোয় ভালোয় উতরে গেলেও চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে নন্দীগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। এদিকে ভোটপর্ব মিটতে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর বিধানসভা এলাকা। বিজেপি দল করার জন্য মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে এক কর্মীর, এমনই অভিযোগ উঠে এসেছে। আহতকে বিজেপি কর্মীরা তমলুক হাসপাতালে গিয়েছে। এই বিষয়ে তৃণমূলের কেউ অবশ্য মুখ খোলেনি। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে তেঘরি এলাকার কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় আচমকা কিছু দুষ্কৃতী বাঁশ ও লাঠি নিয়ে আক্রমণ করে ওই বিজেপি কর্মীকে। তার সঙ্গে গুরুতর আহত হয় মোট ৪ জন। শনিবার তাঁদের সবাইকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে খবর। সব মিলিয়ে ভোট মিটে যাওয়ার পরই হিংসার খবর আসছে পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক জায়গা থেকে।