পূর্ব মেদিনীপুর: হলদিয়া জুড়ে আম আদমি পার্টি বা আপ (AAP)-এর পোস্টার। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বোধহয় অন্যান্য জেলার মতো উপকূলের জেলাতেও সংগঠন তৈরি করতে চাইছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দল। কিন্তু পরে এই পোস্টার ঘিরে বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আসে। আপের তরফে দাবি করা হয়, এরকম কোনও পোস্টার, ব্যানার তাঁরা দেয়নি। এই পোস্টার, ব্যানার ভুয়ো বলে তারা দাবি করে। এরপরই নতুন বিতর্ক শিল্পতালুকে। নিন্দুকেরা বলছেন, আপের প্রতি ‘টানে’ কেউ লক্ষ্মণরেখা পার করে বসেননি তো? এই ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে হলদিয়া পুরভবনের সামনে, কদমতলা মোড়ে এবং ব্রজলালচক বাজার এলাকায় বেশ কয়েকটি ব্যানার দেখা যাচ্ছে। সেগুলি আপের নামে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘যোগদানের জন্য যোগাযোগ করুন।’ একটি ফোন নম্বরও দেওয়া রয়েছে। সঙ্গে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ছবি। কয়েকদিন ধরে কেউ বা কারা এই ব্যানারগুলি লাগায় বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই অবশ্য সেগুলি খুলে ফেলা হয়। তার আগে ওই ফোন নম্বর ও ছবি দেওয়া ব্যানারকে ঘিরে এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। আম আদমি পার্টির তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই ব্যানার দলের কোনও যোগ নেই। এরপরই সোমবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন আপের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ইনচার্জ সুব্রত কুমার সাউ। তিনি বলেন, “একেবারে ভুয়ো ব্যানার। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ এই কাজ করেছে। ব্যানারে যে ব্যক্তির ছবি ও ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে তাঁকে আমরা চিহ্নিত করেছি। ওই ব্যক্তি হলদিয়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ডিঘাসিপুরের বাসিন্দা। তিনি আমাদের দলের সাধারণ সদস্যও না। তাঁর বিরুদ্ধে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। রাজ্য নেতৃত্বকেও সব জানিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, আপ ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের সংগঠনকে ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের পরখ করে নেওয়ার ময়দান হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট। সম্প্রতি আপে যোগদানের ব্যাপারে ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন হলদিয়ার প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ ও বহিষ্কৃত নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। তিনি বলেছিলেন, “আগামী পঞ্চায়েত, লোকসভা নির্বাচনেও যদি তৃণমূল না নেয় তা হলে আপে যেতে হবে আর কী। আমি মনে করি রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকা সম্ভব।” এরমধ্যে হলদিয়ায় এমন ঘটনা। ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা, আপের প্রতি কারও বিশেষ ‘অনুরাগ’ থেকে হয়ত এটা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভবানীপুর থানার ওসি মাহিউল ইসলাম।