পূর্ব মেদিনীপুর: কাশীপুরে বিজেপি যুবনেতার দেহ উদ্ধার ঘিরে যখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, তখন একই ছবি খেজুরিতেও। এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের অভিযোগ ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়। শনিবার বাড়ি থেকে খানিক দূরে একটি গাছ থেকে উদ্ধার হয় দেবাশিস মান্না নামে বছর ২১-এর ওই যুবকের দেহ। খেজুরি থানার বালিচক গ্রামের বাসিন্দা তিনি। এদিন তাঁর দেহ উদ্ধার হয় খেজুরির বাঁশগোড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায়। বিজেপির দাবি, দেবাশিস তাদের দলের কর্মী। কী কারণে এই মৃত্যু তা জানতে পুলিশ যথাযথ তদন্ত করুক। তবে এই মৃত্যু নিয়ে মৃতের পরিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও কথা বলেনি। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, এই মৃত্যু ঘিরে কোনও অভিযোগ তারা পায়নি। সব মিলিয়ে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধছে এই মৃত্যু ঘিরে। দেবাশিসের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
শনিবার সকালের ঘটনা। অভিযোগ, দেবাশিসের বাড়ি থেকে সামান্য কিছু দূরে একটি গাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান এলাকার লোকজন। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। খবর দেওয়া হয় খেজুরি থানায়। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই যুবকের বাবা মুক্তিপদ মান্না এলাকায় সক্রিয় বিজেপি নেতা হিসাবে পরিচিত। এলাকায় রীতিমত সংগঠনকে তিনি নেতৃত্ব দেন বলেও এলাকার একাংশের দাবি। স্বভাবতই মুক্তিপদর ছেলের এমন পরিণতি নিয়ে আলাদা করে চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও পরিবার এই ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে।
তবে পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাশিস কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। সেখান থেকে সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন। সূত্রের দাবি, কলকাতা থেকে কাজ ছেড়ে ফিরে আসেন গ্রামের বাড়িতে। পরিবারের সঙ্গে এ নিয়ে কিছুটা মনোমালিন্যও হয় বলেই ওই সূত্র দাবি করেছে। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনে এই ঘটনার কোনও প্রভাব রয়েছে কি না তাও তদন্ত সাপেক্ষ বলেই মনে করছে পুলিশ।
খেজুরির বিজেপি নেতা তথা কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দলুই বলেন, “ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, আমরা তদন্তের দাবি জানাই। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে যেভাবে তৎপরতা দেখাল তাতে মনে হচ্ছে কিছু রহস্য রয়েছে। গত কয়েকদিন আগে ওই যুবক নিখোঁজ ছিল। তারপরই মৃতদেহ উদ্ধার হল। সারা রাজ্যে যেভাবে বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হচ্ছে। তা তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, “বিজেপির অভ্যাস হয়ে গিয়েছে কোনও মৃত্যু হলেই তাকে রাজনৈতিক মোড় দেওয়া।” খেজুরি থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, “মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।”