ঝালদা: টানাপোড়েন চলছিলই। শেষ পর্যন্ত আইনি মারপ্যাঁচের জেরে সংখ্যাধিক্য পেয়েও ক্ষমতা থেকে আপাতত দূরেই থাকতে হল কংগ্রেসকে (Congress)। ঝালদা পুরবোর্ডের (Jhalda Municipality) চেয়ারম্যান হিসাবে শিলা চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করে কংগ্রেস। এই শিলা চট্টোপাধ্যায় আবার নির্দল প্রার্থী ছিলেন। তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। তার আগেই আচমকা রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে তৃণমূলের জবা মাছুয়ার নামে এক কাউন্সিলরকে পৌর প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও তারপরেও কংগ্রেস তাঁদের নির্ধারিত কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে। সেই সভায় কংগ্রেসের পাঁচ জন আর দুই নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থনে পৌর প্রধান নির্বাচিত হন শীলা চট্টোপাধ্যায়। তবে এখনও এতে সরকারি সিলমোহর পড়েনি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাজ্যপাল এক নির্দেশ জারি করেন। সেই নির্দেশিকাতে বলা হয় ওই পুরসভায় আপাতত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জবা মাছুয়া। পুর আইন মেনেই রাজ্যপাল নির্দেশ দিয়েছেন বলে দাবি প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়ালের। ক্ষুব্ধ কংগ্রেস রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত কে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টেও যাচ্ছে হাত শিবির। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে দায়িত্ব পাওয়া জবা মাছুয়া দায়িত্ব পেলেও তা এক মাসের জন্য। চাপানউতরের মধ্যে তৃণমূলের দাবি সবই হয়েছে আইন মেনে।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের পর থেকেই বাংলার রাজ্য-রাজনীতিতে বিস্তর চর্চা হয় ঝালদা পৌরসভাকে নিয়ে। পুরভোটে জিতেও খুন হয়েছিলেন তপন কান্দু। পরবর্তীতে তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ঝালদা পুরসভায় আসনের সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে পাঁচটি করে আসনে জেতে তৃণমূল ও কংগ্রেস। যদিও জয়ী দুই নির্দল প্রার্থী সমর্থন করে কংগ্রেসকে। তাঁরা পরবর্তীতে সমর্থন তুলে নেওয়ায় অনাস্থা আনে কংগ্রেস। ২২ নভেম্বর ছিল আস্থা ভোট। সেখানে দুই নির্দল প্রার্থীর সমর্থন পায় কংগ্রেস। যদিও তারপরেও পুরবোর্ড ঘটন নিয়ে লাগাতার বেগ পেতে হচ্ছিল হাত শিবিরকে। এবার এই জট কাটাতে হাইকোর্টে জল গড়ালে নতুন কিছু সিদ্ধান্ত হয় কিনা এখন সেটাই দেখার।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, “আমরা আজকে মিটিং করে পৌরপ্রধানের নাম ঠিক করেছি। শিলা চট্টোপাধ্যায়ের পক্ষে রয়েছেন ৭ জন। যেহেতু গতকাল পৌরপ্রধান হিসাবে আর একজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাই সোমবার আমরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব। আগামী তিন দিনের মধ্যে আশা করছি আমাদের পক্ষে রায় পেয়ে যাব।” পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়ালে বলেন, “আপতত জবা মাছুয়া পৌরপ্রধান হিসাবে সমস্ত কাজ করবেন। বিধি মেনেই তাঁকে আসনে বসানো হয়েছে। তবে যে কেউ কোর্টে যেতে পারে। কংগ্রেস যদি আদালতে যায় সেখান থেকে নতুন কোনও নির্দেশ এলে তা মানা হবে।”