ঝালদা: রাতারাতি বদলে গিয়েছে সমীকরণ। পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার ‘দখল’ নিয়েছে তৃণমূল। ঝালদা পুরসভার নির্দল পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়, নির্দল কাউন্সিলর সোমনাথ কর্মকার-সহ আরও তিন কংগ্রেস কাউন্সিলর বুধবার সন্ধেয় যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। আর তাতেই বদলে গিয়েছে অঙ্ক। এই ঝালদা পুরসভা জয়ের নেপথ্যে যাঁর সবথেকে বড় ভূমিকা ছিল, তিনি হলেন কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো। তাঁর হাত ধরেই ঝালদা পুরসভায় জয় পেয়েছিল কংগ্রেস। টিভি নাইন বাংলায় একান্ত সাক্ষাৎকারে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে কার্যত ক্ষোভ উগরে দিলেন নেপাল মাহাতো।
বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সরাসরি নিশানা করলেন শাসক শিবিরকে। তাঁর বক্তব্য, ঝালদায় কংগ্রেসের বোর্ড গঠন হওয়ার পর থেকেই তা চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিল রাজ্যের সরকারি দলের। বলছেন, ‘বোর্ড চলুক, তা তাদের (তৃণমূলের) কোনওভাবেই পছন্দ হত না। বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধেও কেস দিয়েছে। একজন তো ৫০ দিন জেল খেটেছেন। সব ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত হাউজ় ফর অল প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিল।’ ঝালদা পুরসভার এই পরিস্থিতি যে একপ্রকার শাসক দলের চাপের কাছে নতিস্বীকার, সে কথাও মেনে নিচ্ছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা।
কিন্তু একদিনে যখন জাতীয় রাজনীতিতে এক ছাতার তলায় আসছে কংগ্রেস ও তৃণমূল, যখন এক টেবিলে বসে বৈঠক হচ্ছে। লোকসভা ভোটের রণকৌশল তৈরি হচ্ছে, তখন ঝালদার এই পরিস্থিতি কীভাবে দেখছেন তিনি? এরপরও কি তিনি চাইবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে এক টেবিলে বসে বৈঠক হোক? এই বিষয়ে অবশ্য সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। বলছেন, ‘সর্বভারতীয় রাজনীতির ব্যাপারটি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রের। এটি জাতীয় রাজনীতির ব্যাপার, এই নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু জোট হোক বা যাই হোক, এই ধরনের ঘটনার প্রভাব রাজ্যের সাধারণ কর্মীর উপর পড়বেই।’
নেপাল মাহাতো আরও জানান, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও বলছেন বাংলার পরিস্থিতি কী রয়েছে। অধীর চৌধুরীর সুরে সুর মিলিয়েই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার দাবি, এই মুহূর্তে রাজ্যস্তরে বন্ধুত্বের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন তিনি।