পুরুলিয়া: প্রায় সাত মাস আগে প্রয়াত হয়েছেন তিনি, তারপরও করোনার দ্বিতীয় টিকা পেলেন পুরুলিয়ার এক বৃদ্ধা। যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে গোটা জেলায়। কীভাবে মারা যাওয়ার পরও ওই বৃদ্ধার নামে করোনা টিকা নেওয়ার মেসেজ জারি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর পরিবারের লোকেরাও। বৃদ্ধার নাতি অমরনাথ রায় গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
পুরুলিয়া জেলার ঝালদা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অন্নদা রায় (৬৯) গত এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখে মারা যান। মৃত্যুর আগে ওই বৃদ্ধা করোনা টিকাকরণের প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন। গত নভেম্বর মাসের ২০ তারিখে ওই বৃদ্ধার রেজিস্টার মোবাইলে করোনার দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ হওয়ার একটি মেসেজ আসে। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে বৃদ্ধার পরিজনদের। ওই বৃদ্ধার নাতি অমরনাথ রায় গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলার স্বাস্থ্য দফতরের দিকে আঙুল তুলেছেন।
অমরনাথবাবু এদিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘আমার ঠাকুমা ৬ মাস আগে মারা গেছেন। তারপরও গত নভেম্বর মাসের ২০ তারিখে ভ্যাকসিনের ২য় ডোজ নেওয়া মেসেজ এসেছে। মৃত ঠাকুমা কীভাবে ভ্যাকসিনের ২য় ডোজটি নিলেন! মোবাইলে মেসেজ আসার পর আমি ঠাকুমার দ্বিতীয় ডোজ হওয়ার প্রমাণ হিসেবে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করেছি। অনেকেই ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না অথচ তাদের মোবাইলে টিকাকরণের মেসেজ চলে আসছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনর সম্পূর্ণ নজর দেওয়া প্রয়োজন। ভ্যাকসিনেশনের এই ব্যাপার ঠিক হচ্ছে না। একজন মৃত মানুষ কীভাবে ভ্যাকসিন পেতে পারেন তা প্রশাসন নজর দিক।’
শুধু অভিযোগ করেই ক্ষান্ত হননি ওই বৃদ্ধার নাতি। তাঁর দাবি গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তিনি। তবে এই ব্যাপারে পুরুলিয়া জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বলেন, গোটা বিষয়টি তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
প্রসঙ্গত এর আগেও করোনার টিকাকরণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি এ রাজ্যেও নানা গাফিলতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও বহু মানুষের কাছে ভ্যাকসিন নেওয়ার কোনও মেসেজ আসেনি, এমনকি তাদের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটও জেনারেট হয়নি সরকারি অ্যাপগুলি থেকে। প্রসঙ্গত দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের পর্দাফাঁসের পর থেকেই এ রাজ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে নানা অভিযোগ সামনে উঠে এসেছে। পুরুলিয়ার এই ঘটনা আবারও ভ্যাসকিন বিতর্ককে উস্কে দিল।
আরও পড়ুন: Boat sank in Sundarban: নিষেধাজ্ঞা উড়িয়েই যাতায়াত, বেতনী নদীতে নৌকা উল্টে পড়ে গেলেন ১০ জন