পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভায় ফের জলঘোলা। আজ ঝালদা পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে শিলা চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করল কংগ্রেস। শিলা চট্টোপাধ্যায় দায়িত্ব নিয়ে বলেন, “ঝালদার মানুষ যাতে ঠিকমতো পরিষেবা পান, সেটাই মুখ্যত দেখব।” উল্লেখ্য, শিলা চট্টোপাধ্যায় নির্দল প্রার্থী ছিলেন। পরে তৃণমূলকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু সেখানে ঠিক মতো দায়িত্ব পাননি বলেই দাবি করেছেন শিলা। শিলা-সহ নির্দল দুই প্রার্থীকে দলে টেনে তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে ফের আস্থাভোটে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছিল তৃণমূল। এবার তাঁকেই চেয়ারম্যান করল কংগ্রেস।
শুক্রবার রাজ্যপাল এক নির্দেশ জারি করে জানিয়েছেন, ওই পুরসভায় আপাতত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জবা মাছুয়ার। তিনি তৃণমূলের। পুর আইন মেনেই রাজ্যপাল নির্দেশ দিয়েছেন বলে দাবি অপসারিত পুর চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়ালের। ঝালদা পুরসভা নিয়ে জটিলতা কেটেও কাটছে না। পুরভোটে জিতেও খুন হয়েছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। পরে তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১২ আসনের ঝালদা পুরসভায় তৃণমূল ও কংগ্রেস দু’পক্ষই পাঁচটি করে আসন জেতে। দুই নির্দল প্রার্থীর সমর্থন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস পুরবোর্ডের দখল নেয়। পরে নির্দল প্রার্থীরা সমর্থন তুলে নেওয়ায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে কংগ্রেস। গত বাইশে নভেম্বরের আস্থা ভোটে দুই নির্দল প্রার্থীর সমর্থন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু আস্থা ভোটে জিতেও পুরবোর্ডের দখল পেতে বেগ পেতে হচ্ছে কংগ্রেসকে। রাজ্যপালের নির্দেশে আপাতত পুরবোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাবেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূল কাউন্সিলর জবা মাছুয়ার। তিনি অপসারিত চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়ালের ঘনিষ্ঠ বলে কংগ্রেসের অভিযোগ।
ঝালদা পুরসভার অপসারিত চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়াল এই নিয়োগকে বৈধ বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, নিয়ম মেনেই সব কিছু হয়েছে। প্রশাসন ঠিক কাজ করেছে।
শনিবার সকালে চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করে কংগ্রেস। কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকেই ঝালদা পৌরসভাকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। রয়েছে বিশাল বাহিনী। পৌরসভার ২০০ মিটার এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এলাকায় চলছে পুলিশি টহল। থমথমে এলাকা। তৃণমূল কংগ্রেসের হাত থেকে ঝালদা পৌরসভা দখল নেওয়ার পর কংগ্রেস জোটের নতুন চেয়ারম্যান বসার দিন। ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পৌরসভার একদিকে কংগ্রেস এবং নির্দল মিলিয়ে ৭ জন, অন্যদিকে শাসক দল তৃণমূলের পক্ষে ৫ জন। সাত-পাঁচের এই লড়াইয়ে ঝালদা শহরে তৈরি হয়েছে জটিল রাজনৈতিক সমীকরণ।