পুরুলিয়া: জেলা পরিষদের একটি আসন। তার জন্য মনোনয়ন দাখিল করলেন তৃণমূলের তিনজন। মানবাজার-১ ব্লকের এই ঘটনা ঘিরে জোর আলোচনা বিভিন্ন মহলে। কেন একটি আসনে একই দলের তিনজনের মনোনয়ন? কারণ হিসাবে দলের অন্দরের দলাদলি তত্ত্বই উঠে আসছে সামনে। মানবাজার-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবেন্দ্রনাথ মাহাতোর স্ত্রী কবিতা মাহাতো। তাঁর নামই এই আসনের জন্য নির্ধারিত করেছে দল। তিনি সেইমতো মনোনয়নও দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, এই কবিতায় আপত্তি দলের একাংশের।
দলীয়ভাবে কবিতা মাহাতোর নাম প্রকাশ করা হলেও, তাঁকে বহিরাগত বলে অভিযোগ তুলে এই আসনেই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শান্তিগোপাল মাহাতোর মা সুচিত্রা মাহাতো। মহিলা সংরক্ষিত এই আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক যুব সভাপতি কিশোর মাহাতোর স্ত্রী গীতাঞ্জলি মাহাতোও মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তিন তিনজন প্রার্থী দল থেকেই, স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল। টিকিট নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে। অনেকেই প্রকাশ্যে সেই ক্ষোভ উগরেও দিয়েছেন।
সর্বশেষ তথ্যতে দেখা যাচ্ছে জেলা পরিষদের মোট ৪৫ আসনের জন্য তৃণমূল থেকে মনোনয়ন জমা পড়েছে ৭৩টি। তৃণমূল প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার পর দেখা গিয়েছে, বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষদের একটা বড় অংশের নাম নেই সেখানে। যদিও অনেকেই দলের সম্মতি ছাড়াও মনোয়নপত্র জমা করেছেন বলেও সূত্র মারফত খবর। কেউ কেউ আবার নির্দলে সমর্থনের কথাও বলেছেন।
গীতাঞ্জলি মাহাতোর স্বামী কিশোর মাহাতো, যিনি মানবাজার ১ ব্লকের যুবনেতা, তিনি বলেন, “দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা তালিকা পাঠাই। ৪-৫টা নাম ছিল। সেখানে গীতাঞ্জলির নাম ১ নম্বরে ছিল। ৩ নম্বরে ছিলেন ছিলেন সোনামণি মাহাতো। তাঁকে ড্রপ করে বহিরাগত একজনকে প্রার্থী করে দিয়েছে। আমরা তা মানব না। মনোনয়নের পরও চারদিন সময় আছে। দল ভাবনাচিন্তা করুক কাকে প্রতীক দেবে। প্রতীক না পেলে নির্দলেই লড়বে। সেটা যদিও এখনও অফিশিয়ালি বলছি না।”
গীতাঞ্জলি বলেন, “দরকার হলে নির্দল হয়ে লড়ব। বহিরাগত দিয়ে আমরা প্রার্থী মানব না। কবিতা মাহাতো অন্য অঞ্চলের বাসিন্দা। প্রভাব খাটিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে।” আরেক প্রার্থী সুচিত্রা মাহাতোর কথায়, “আমাদের এলাকার লোক নয়, তাঁকে প্রার্থী করল। বহিরাগত প্রার্থী মানব না।” তবে এই সমস্যা মিটে যাবে বলে দাবি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। বিদায়ী সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দল যাদের মনস্থ করেছে, নির্বাচনে তারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অন্যদের বোঝানো হবে। তাঁরা নিশ্চয়ই সরে যাবেন।”