দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সাত বছর হয়েছিল বিয়ের। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই টাকা পয়সার জন্য চাপ দিতে থাকেন শ্বশুরবাড়ির লোক। মেয়ে যাতে শ্বশুরবাড়িতে ভাল থাকেন, তার জন্য প্রতিনিয়ত টাকাও দিতে থাকতেন মেয়ের বাবা। কিন্তু তাতেও রক্ষা হল না। গৃহবধূকে বেধড়ক মারধর করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কুলতলি থানার ১ নম্বর মেরিগঞ্জ পঞ্চায়েতের কচিয়ামারা এলাকার কয়ালের চক গ্রামে। মৃত গৃহবধূর নাম অর্চনা হালদার (২২)। ক্যানিং থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি মৃত গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়ি কে আটক করেছে জিঞ্জাসাবাদের জন্য।
বারুইপুরের বেলেগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোলা দোলতলা গ্রামের বাসিন্দা রবীন বৈদ্য। তাঁর চার মেয়ে ও এক ছেলে। বিগত প্রায় সাত বছর আগে দেখাশোনা করে তিনি তাঁর মেজো মেয়ে অর্চনাকে বিয়ে দিয়েছিলেন কুলতলির ১ নম্বর মেরিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের কচিয়ামারা এলাকার কয়ালের চক গ্রামের পলাশ হালদারের সঙ্গে।অভিযোগ বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত টাকা পয়সা দাবি করে ওই গৃহবধূর ওপর শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার চালাতো শ্বশুর বাড়ির লোকজন। মেয়ের ওপর যাতে করে কোন প্রকার অত্যাচার না হয় তার জন্য ওই গৃহবধূর বাপের বাড়ি থেকে প্রতিনিয়ত টাকা পয়সা পাঠানো হত। গত কয়েকদিন আগেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই গৃহবধূকে বেধড়ক মারধর করেন।
ওই গৃহবধূ বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ বৃহস্পতিবার ভোর তিনটের সময় বেধড়ক মারধর করে খুন করে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এরপর পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই গৃহবধূকে বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অভিযোগ মৃতার বাপেরবাড়ির। চিকিৎসকরা তাঁকে দেখেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
খবর চাউর হতেই গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামেই গৃহবধূর শাশুড়ি লক্ষ্মী হালদার ও স্বামী পলাশ হালদারকে বেঁধে বেধড়কভাবে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্বরেও। খবর পেয়ে পৌঁছয় ক্যানিং থানার পুলিশ। ওই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।পাশাপাশি মৃত গৃহবধূর দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। আপাতত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।