আমফানের কোপ কাটিয়ে ফের ইয়াস বিধ্বস্ত মৌসুনি দ্বীপ, এগিয়ে এল প্রশাসন

সৈকত দাস |

May 30, 2021 | 7:48 PM

বিপর্যস্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য শুরু হল কমিউনিটি কিচেন। এলাকার স্কুলে স্কুলে রোজ মিলবে খাবার। প্রতিদিন মৌসুনির সাড়ে বারো হাজার মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে জেল প্রশাসনের তরফে।

আমফানের কোপ কাটিয়ে ফের ইয়াস বিধ্বস্ত মৌসুনি দ্বীপ, এগিয়ে এল প্রশাসন
মৌসুনি দ্বীপের ফাইল ছবি

Follow Us

সুন্দরবন: আমফানের থাবা কাটিয়ে একটু একটু করে সেজে উঠেছিল সুন্দরবনের নামখানা ব্লকের মৌসুনি দ্বীপ। দিঘা, মন্দারমণি, বকখালির পাশাপাশি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠেছিল এই নির্জন দ্বীপটি। কিন্তু ইয়াসের তাণ্ডবে ফের বিধ্বস্ত মৌসুনি দ্বীপ। গৃহহীন বহু মানুষ। এই অবস্থায় রবিবার থেকে প্রশাসনের উদ্যোগে ইয়াস বিধ্বস্ত মৌসুনি দ্বীপে শুরু হল কমিউনিটি কিচেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, মহকুমা শাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর, সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়-সহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য পদস্থ কর্তা।

গত বুধবার ইয়াসের তাণ্ডবে নামখানা ব্লকের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। ইয়াস প্রভাবিত মৌসুনি দ্বীপের ১২ হাজার মানুষ। সেই বিপর্যস্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য শুরু হল কমিউনিটি কিচেন। এলাকার স্কুলে স্কুলে রোজ মিলবে খাবার। প্রতিদিন মৌসুনির সাড়ে বারো হাজার মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে জেল প্রশাসনের তরফে। এদিন থেকে রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

২০২০-র মে মাসে আমফানে একপ্রকার ধংস হয়ে গিয়েছিল মৌসুনি দ্বীপ। ভয়ঙ্কর সেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের স্মৃতি মুছে যখন একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল মৌসুনি দ্বীপ, ফের আঘাত হানল ইয়াস। মৌসুনি দ্বীপে প্রায় ১৯ হাজার মানুষের বসবাস। ইয়াস আর ভরা কোটালের জোড়া ফলায় বিধ্বস্ত এলাকা। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে অনেকের মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও। এখন শেষ সম্বলটুকু নিয়ে তাঁরা দিন কাটাচ্ছেন ত্রাণশিবিরে।

স্কুল, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র সহ ৪৫টি জায়গায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপর্যস্ত মানুষদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিন মৌসুনির সাড়ে বারো হাজার মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে জেল প্রশাসনের তরফে। সেখানেই আজ থেকে রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর জানান, ইতিমধ্যে মৌসুনিতে পনেরটি জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও পাউচ প্যাকেটে নিয়মিত জল পাঠানো হচ্ছে। এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত নলকূপ মেরামতির জন্য পিএইচই- এর সঙ্গে কথা বলে কাজও শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। জলও নামতে শুরু করেছে। মৌসুনির বেশ কিছু এলাকায় জল নেমে গেছে বলে দাবি প্রশাসনের।

আরও পড়ুন: বাঁধের ওপর আস্তানা, সঙ্গে বাঘের ডাক! আতঙ্কের আরেক নাম কুমিরমারি দ্বীপ 

মৌসুনি দ্বীপের মানুষের একমাত্র আয় পর্যটন কেন্দ্রিক। সেখানে লকডাউন শুরু হওয়ায় এমনিই অভাব অনটন ছিল তাঁদের নিত্যসঙ্গী। তারপর ইয়াস যেন কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিল। এখন মৌসুনি জুড়ে শুধুই মানুষের কান্না আর হাহাকার। তবে প্রশাসন অভয় দিয়ে জানাচ্ছে, যতটা সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়ানো হবে।

Next Article