দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ৫ ঘণ্টা পরে তালদি স্টেশনে রেল অবরোধ উঠল। সকাল ১০.৪৯ মিনিটে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। ফের শিয়ালদা-দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ফার্স্ট ট্রেন না চলার প্রতিবাদে বুধবার ভোর রাত থেকে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন নিত্যযাত্রীরা। বুধবার সকালেই শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় ক্যানিং লাইনের তালদি স্টেশনে লাইনের ওপর তুলে দেওয়ার হয় লোহার পাত। ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন হাজার খানেক মানুষ। সাতসকালেই নিত্যযাত্রীদের বিক্ষোভে ব্যাহত হয় শিয়ালদা-ক্যানিং লাইনের ট্রেন চলাচল।
অভিযোগ, ক্যানিং থেকে শিয়ালদাগামী প্রথম আপ ট্রেন ৩:৫২ মিনিটে ছাড়ে। সেই ট্রেন না চলার কারণে বহু মানুষ নিজেদের কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। এই কারণেই বুধবার সকাল থেকেই একেবারে রেললাইনের ওপর লোহার পাত তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নিত্যযাত্রীরা।
হাজার খানেক যাত্রী রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সম্পূর্ণ ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ক্যানিং লাইনের ট্রেন চলাচল। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জিআরপি ও আরপিএফ বাহিনী।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তবে নিত্যযাত্রীদের বোঝানো অতো সহজ হয়নি। এরই মধ্যে বাধে আরেক গোল। নিত্যযাত্রীদের একাংশই বিক্ষোভ তুলে নেওয়া কথা বলেন। তাতে বিক্ষোভকারীরা রেগে গিয়ে চড়াও হন তাঁদের ওপরেই। এতে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে বেসামাল হয়ে পড়ে। রেলপুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সব মিলিয়ে কর্মব্যস্ত দিনে রেল পরিষেবা একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দক্ষিণ শাখায়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, করোনার জেরে ট্রেন পরিষেবা এমনিতেই ব্যাহত। অথচ বাকি সবই প্রায় খোলা। এতে গরিব মানুষের রুজি-রুটির উপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে। ফলে লোকাল ট্রেন পরিষেবা সচল রাখতে হবে। প্রয়োজনে বেশি ট্রেন চালাতে হবে, দাবি যাত্রীদের।
এক বিক্ষোভকারীর কথায়, “আমরা গ্রামের মানুষ। রোজই শহরে যাই। শহরে যেতেই হয়। না হলে পেট চলবে কীভাবে। আমাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ট্রেন। এমনিতেই গত লকডাউনে প্রচুর খারাপ অবস্থা হয়েছে আমাদের। এখন আবার! ট্রেন পরিষেবা ঠিকঠাক থাকলে তো খেয়েপড়ে বাঁচতে পারি আমরা। নাহলে করোনা হওয়ার আগেই না খেয়ে মরে যাব।”
আরেক যাত্রী বলেন, “গরিবরাই সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে। কাজে যাব কেমন করে? কাজে না গেলে টাকা কি আর এমনিতে দেবে আমাদের? মালিক কি শুনবে ট্রেন চলছে না? আমাদের কথা ভাবেটা কে? প্রথম ট্রেনে কত মানুষ শহরে যায় কাজে জানেন! আমাদের অবস্থাই সবচেয়ে বেশি খারাপ হচ্ছে। এর একটা সমাধান হওয়া প্রয়োজন।”
শেষমেশ ১০.৪৯ মিনিট নাগাদ অবরোধ তুলে নেন নিত্যযাত্রীরা। তবে এর সমাধান সূত্র এখনও বের হয়নি। জিআরপি, আরপিএফ ও ক্যানিং থানার পুলিশ এক যোগে শেষমেশ জোর করে বিক্ষোভ তুলে দেয়। তাতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের কিছুটা ধস্তাধস্তিও হয়।
আরও পড়ুন: Viswa Bharati Corona Situation: অন্দরে বাড়ছে সংক্রমণ, বন্ধ করে দেওয়া হল বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক কাজও