দক্ষিণ ২৪ পরগনা: উত্তরে হাওয়াকে সঙ্গী করে ফের বঙ্গে ফিরেছে কনকনে শীত। আর পৌষের ঠান্ডার মধ্যে হচ্ছে দুর্গাপুজো (Durga Puja)! ঢাক বাজিয়ে চলছে দশভূজার বন্দনা! কিন্তু শীতে কেন অকাল বোধন?
আসলে ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপূজা কে স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই অকাল দুর্গোৎসবে মেতে উঠেছে রাজপুর সোনারপুর ৩৫ নং ওয়ার্ড। তৃণমূল কংগ্রেসের ২৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে রীতিমতো জাঁকজমক ভাবে দুর্গাপুজো করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও নজর কেড়েছে এই পুজো।
বাংলার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার পর রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে সম্পূর্ণভাবে মা দুর্গার প্রতিমা বানিয়ে পুজো করা হল। যার নাম-ও দেওয়া হয়েছে মা দুর্গার অকাল বোধন। এই পুজোতে শামিল হয়েছেন হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান সহ সমস্ত ধর্মের মানুষ। তাঁরা আজ একত্রিত হয়ে এই দুর্গাপুজো সম্পন্ন করলেন। একে অপরের হাতে হাত রেখে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে প্রতিজ্ঞা করলেন বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোন ভাবেই নষ্ট হতে দেবেন না। উঠল ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি। ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়’ ও ‘ভারত মাতার জয়’ স্লোগান। উদ্যোক্তারা দাবি করেন, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার পরিকল্পনা করছে, তাদের বাংলায় কোনও স্থান নেই। তাই সর্বধর্মের একতাকে উদ্দেশ্য করে এই দুর্গাপুজো করা হচ্ছে। এভাবেই দুর্গামূর্তি বানিয়ে পুজো করলেন তাঁরা। পুজোর মূল উদ্যোক্তা রাজপুর সোনারপুর পৌরসভা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সৌরভ প্রধান। তাঁর কথায়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষাতেই এহেন উদ্যোগ।
প্রসঙ্গত, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে বাঙালির প্রিয় দুর্গা পুজো। ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল হেরিটেজের স্বীকৃতি পায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত হয় ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ১৬ তম অধিবেশন। সেই অধিবেশনেই ‘কলকাতার দুর্গাপুজো’-কে ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায় যুক্ত করা হয়। সংস্থার ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়, “দুর্গা পুজাকে ধর্ম ও শিল্পের সর্বজনীন মিলন ক্ষেত্রের সর্বোত্তম উদাহরণ হিসাবে দেখা হয় এবং সহযোগী শিল্পী ও ডিজাইনারদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হয়। এই উৎসব শহুরে এলাকায় বড় আকারের পালিত হয় এবং মণ্ডপগুলির পাশাপাশি রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাক এবং দেবীর পূজা।”
উৎসব চলাকালীন সব শ্রেণি, ধর্ম এবং জাতিগত বিভাজন ভেঙে দর্শকদের ভিড়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই গোটা প্রক্রিয়াই ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছে ইউনেস্কোর দরবারে।