কলকাতা: ভাঙড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আরাবুল-কাইজার জামানার কি সমাপ্তি! পাকাপাকিভাবে কি এবার ভাঙড়ের সবুজ মাটি শওকাত মোল্লার! বৃহস্পতিবার তৃণমূলের দোদণ্ডপ্রতাপ নেতা গ্রেফতার হওয়ার পর সেই প্রশ্ন ভাঙড়ের রাজনৈতিক অন্দরে! পঞ্চায়েত ভোটের পর ভাঙড় ১ তৃণমূল কংগ্রেস থেকে কার্যত ছেটে দেওয়া হয়েছে কাইজার আহমেদকে। পঞ্চায়েত ভোটে কোনও টিকিট দেওয়া হয়নি তাঁকে। এমনকি দলের কোনও পদেও তাঁকে রাখা হয়নি। কাইজারের পর আরাবুল ইসলাম! ভাঙড় ২ ব্লকে আরাবুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ার পর শওকাত মোল্লার হাতেই থাকবে ক্ষমতা। পাকাপাকি ভাবে শওকাত মোল্লা ভাঙড়ের রাশ নিজের হাতে রাখবে বলে মত রাজনৈতিক কারবারিদের।
সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে আগেই অবিভক্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৎকালীন সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায় ভাঙড় বিধানসভার মোট ১৩টি অঞ্চলকে দু’টি ভাগে ভাগ করেন। ১০টি অঞ্চল নিয়ে তৈরি হয় ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। দায়িত্বে আরাবুল ইসলাম। বাকি তিনটি অঞ্চল নিয়ে তৈরি হয় ভাঙড় ১ এর ‘এ’ তৃণমূল কংগ্রেস। তিনটি অঞ্চল জাগুলগাছি, প্রানগঞ্জ ও নারায়নপুর। যার দায়িত্ব ভার দেওয়া হয় কাইজার আহমেদের হাতে।
তেইশের পঞ্চায়েত ভোটের পর ভাঙড় ১ এর ‘এ’ সাংগঠনিক কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। সরানো হয় কাইজারকে। ভাঙড় ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি হয়। ভাঙড় ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক সভাপতি হন শাহাজান মোল্লা। তিনি আবার শওকাত মোল্লার ডান হাত হিসাবে পরিচিত। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পান বাহারুল ইসলাম, আহসান মোল্লা, সাবিরুল ইসলামরা।
অপরদিকে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখ অহিদুল ইসলাম ও নান্নু হোসেন ২০২১ বিধানসভা ভোটের পর মারা যান। একমাত্র বরিষ্ঠ নেতা হিসাবে থাকেন আরাবুল ইসলাম। এখন আরাবুল ইসলাম সরে যেতেই বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার জন্ম হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস ভেঙে হতে পারে তিনটি সাংগঠনিক কমিটি। যেখানে শওকাত মোল্লা ঘনিষ্ঠরাই সেই কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন। আরাবুল ইসলাম বিরোধী হিসাবে পরিচিত খাইরুল ইসলাম (পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য), জাভেদ মিঁয়াদাদ(আরাবুল বিরোধী হিসাবে পরিচিত নান্নু হোসেনের ছেলে), মিজানুর রহমান(পোলেরহাট ১ এর প্রাক্তন প্রধান), মহাসিন গাজিরা (ভাঙড় ২ সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি) গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে পারে বলে খবর। ফলে একরকম ভাঙড় তৃণমূল কংগ্রেসের রাশ থাকবে শওকাত মোল্লার হাতেই, বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।