দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ফুল সাজানো কলার ভেলা। তাতে শুয়ে নাবালিকা। নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। জানা গিয়েছে, সাপের কামড়ে মৃত ওই নাবালিকার শরীর সৎকার না করেই ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে নদীর জলে। আর এর থেকে উঠে যাচ্ছে প্রশ্ন।
এ যেন মনসা মঙ্গল কাব্যের ছায়া একুশ শতকেও। সাপের কামড়ে মৃত বালিকার দেহ সৎকার না করে কলার ভেলায় চাপিয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হল নদীর জলে। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের সাগর ব্লকের মৃত্যুঞ্জয়নগরে। সেখানেই সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় শ্রাবণী মালাকারের। ওই নাবালিকা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরবেলা বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় বিষধর কেউটে ছোবল দেয় বছর দশের শ্রাবণীকে। জানতে পেরে প্রথমেই তৎক্ষণাৎ নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিবেশী ওঝার কাছে। সেখানে কিছু না হওয়ায় তারপর নিয়ে যাওয়া হয় সাগর ব্লক হাসপাতালে। চিকিৎসকরা অ্যান্টিভেনাম ইঞ্জেকশন দেয়। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
এরপর দেহ ফিরিয়ে আনা হয় বাড়িতে। রাত্রিবেলা প্রচলিত বিশ্বাসে পাশের মুড়িগঙ্গা নদীতে কলার ভেলাতে শ্রাবণীর দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। পরিবার ও প্রতিবেশীদের বিশ্বাস, নদীর নোনা জলে সাপে কামড়ানো শ্রাবণী আবার প্রাণ ফিরবে। একুশ শতকে দাঁড়িয়ে পুরান কাব্যের ছায়ায় রীতিমত হইচই পড়ে গিয়েছে পুরো এলাকায়। ভেলাটি দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। তবে বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সাপের কামড়ে মৃত্যুর পর কোনও ভাবে প্রাণ ফেরা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধিরা। এই ঘটনা নিছকই কুসংস্কার বলেছেন তাঁরা।
এক এলাকাবসী বলেন, ‘কালকে দুপুরের দিকে বাবা মা নিয়ে শুয়েছিল। তখন সাপ এসে শিশুকে ছোবল মারে। তখনই মারা যায়। কলার ভেলায় ভাসনো হয়েছে আমরা দেখতে এসেছি।’