ভাঙড়: ফুল চাষ করে সেই ফুল বিক্রি করাই ছিল পুরনো পেশা। কিন্তু বিঘার পর বিঘা ফুলের চাষ করেও যা মুনাফা আসত, তাতে চাষের খরচ উঠত না। তাই, এবার এক নতুন ব্যবসায় মন দিয়েছেন ভাঙড়ের চাষিরা। ফুল গাছ কাটিং করে সেটাকেই মাটিতে পুঁতে চারা গাছে পরিণত করা হচ্ছে। তারপর ববরফে মুড়ে সেই চার গাছই পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। পাঠানো হচ্ছে দেশের বাইরেও।
ভাঙড়ের মাঠিতে চাষ হওয়া ফুলের চারা ফুল ফোটাচ্ছে দেশের একাধিক রাজ্যের পাশাপাশি ভিন দেশেও। ভাঙড়কে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সবজি ভাণ্ডার বলা হয়। ফি বছর নানা সবজি চাষ করে মুনাফা অর্জন করেন এলাকার কৃষকরা। বর্তমানে সবজি চাষের পাশাপাশি অর্থ উপার্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে ফুলের চারা বানানো। বিগত দিনে গাঁদা, রজনীগন্ধা ফুল চাষ করতেন এলাকার চাষিরা। চাষের জমির অনুর্বরতা ও কম মুনাফার জন্য ফুল চাষ বাদ দিয়ে অধিকাংশ চাষিরা ফুলের চারা বানাতেই বর্তমানে বেশি আগ্রহী। ভাঙড়ের লাঙলবেঁকী, নাটাপুকুর, সাতুলিয়া, রঘুনাথপুর, নওয়াবাদ-সহ একাধিক এলাকায় মাঠের পর মাঠ জুড়ে চাষিরা তৈরি করছেন গাঁদা ফুলের চারা। লাভের কথা স্বীকারও করছেন কৃষক প্রণব, সুভাষ, দুর্যোধনরা।
প্রণব মণ্ডল নামে এক কৃষক জানিয়েছেন, বর্তমানে এক বিঘা থেকে ৬০-৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত আসে এই চারা গাছের চাষে। চারা গাছ যায় আগ্রা, অমৃতসর, বেঙ্গালুরু, নাগপুর-সহ দেশের একাধিক জায়গায়। নেপাল ও বাংলাদেশেও চারা পাঠানো হচ্ছে বর্তমানে। গাছ থেকে কাটিং করে চারা তৈরি করতে ৬-৭ দিন সময় লাগে বলে জানিয়েছেন তিনি। এরপর ব্যবসায়ীরা সেই চারা পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
কৃষকরাই শুধু লাভবান হচ্ছেন তা নয়, মুনাফা পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এলাকার রিন্টু মোল্লা, বিমান মণ্ডল, অসিত রায় প্রমুখ চাষিদের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে বরফ দিয়ে প্যাকেট করে ট্রেনে অথবা বিমানে পাঠিয়ে দিচ্ছেন ভিন রাজ্য ও অন্যান্য দেশে। কৃষকদের টাকা দিয়েও তার থেকে কিছু লভ্যাংশ রেখে ব্যবস্যা করছেন তাঁরা। এ ভাবেই এই মুহূর্তে লাভের মুখ দেখাচ্ছে চারা গাছের ব্যবসা।