কুলপি: মাস ছয়েক আগে ধরা পড়ে যক্ষ্মা। চলছে চিকিৎসাও। আর সে কারণেই নিয়মিত কলেজ আসতে পারেননি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলপির (Kulpi) গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজের (ITI College) ছাত্র রাজীব শী। অনুপস্থিতির কারণে তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দিল না কলেজ। পরীক্ষা দিতে এসে দীর্ঘক্ষণ কলেজের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলেন ওই ছাত্র। তারপরেও তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দিতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ দৃশ্য দেখে হতবাক কলেজের অন্যান্য পড়ুায়ারা। যদিও কলেজের অধ্যক্ষের দাবি, তাঁর হাতে কিছুই নেই। উপর মহলের নির্দেশেই কলেজে থেকে বাদ গিয়েছে ওই পড়ুয়ার নাম।
কুলপির গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজে এসি ও রেফ্রিজারেটরের দু’বছরে কোর্স করার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন ডায়মন্ড-হারবার ২ নম্বর রামনগর থানার মহেশ্বরা এলাকার বাসিন্দা রাজীব। সম্প্রতি তাঁর প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষা দিতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই ছাত্র। সূত্রের খবর, ৬ মাস আগে যক্ষ্মা ধরা পড়ে রাজীবের। বর্তামানে চিকিৎসা চলছে তাঁর। চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ইতিমধ্যেই তিনি কলেজের কাছে জমা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, নিয়মিত কলেজে উপস্থিত না হওয়ার ফলে কলেজ থেকে তাঁর নাম কেটে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কোনওরকম সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ। এরমধ্যে বুধবার থেকে কলেজের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর নির্দিষ্ট সময়ের আগে কলেজে পৌঁছালেও পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ওই ছাত্রকে। তাতেই রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি।
এই ঘটনায় কলেজের প্রিন্সিপাল সৌরভ কুন্ডু জানিয়েছেন, “ভর্তি হওয়ার পর থেকে ওই ছাত্র নিয়মিত কলেজে আসতেন না। তিনি অন্য একটি কাজেও যুক্ত। তাঁর বক্তব্য একপাশে কাজও করব আবার কলেজেও পড়াশোনা করব। প্রায় দু’মাসের বেশি সময় কলেজে ওই ছাত্রের উপস্থিতির হার কমে যাওয়ায় নাম ডিসচার্জ হয়ে গিয়েছে। উপস্থিতির হার মাত্র সাত দিন। তারপর কলেজে এসে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার দু’রকম মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা করে পরীক্ষায় বসতে চাইছেন। এক্ষেত্রে কিছুই আর কলেজের হাতে থাকে না। কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে ওই ছাত্রের নাম ডিসচার্জ করা হয়েছে।” রাজীব শী বলেন, “আমি পরীক্ষার যা নিয়ম আছে সব মেনেছি। কিন্তু, যক্ষ্মা হওয়ার কারণে আমি নিয়মিত কলেজে উপস্থিত থাকতে পারিনি। আমি এ বিষয়ে কলেজের সঙ্গে কথাও বলেছিলাম। রোগের সমস্ত তথ্যও দিই। কিন্তু, কলেজ জানায় উপস্থিতির হার কম থাকার জন্য পরীক্ষায় না বসতে পারলে সব দায় আমার। এটা জোর করে আমার অভিভাবককে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে।” যদিও ছাত্রের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।