জয়নগর: জোড়া খুন নিয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি জয়নগরে। কালীপুজোর পরের দিনই জয়নগরের প্রত্যন্ত গ্রাম দোলুয়াখাটি বগটুইয়ের স্মৃতি ফেরার। গ্রামের জ্বলছে পরপর ২০-২৫টি বাড়ি। একটা গ্রামে যতদূর চোখ যাচ্ছে, ততদূর পর্যন্ত বাড়ি জ্বলছে। বাড়ির বাসিন্দারা চোখের সামনে সর্বস্ব পুড়তে দেখছেন। আগুন নেভানোর কেউ নেই। বাইরে থেকে গ্রামে কেউ ঢুকতেই পারছেন না। গ্রাম পুরুষশূন্য। সাতসকালে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর (৪৩) নামে তৃণমূল নেতাকে খুনের অভিযোগ ওঠে। আর তারপরই গ্রামে দৌরাত্ম্য চালানোর অভিযোগ ওঠে মৃতের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। গুলি করে খুনে অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে পিটিয়েই মেরে ফেলা হয়েছে। আর এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ধৃত জেরায় স্বীকার করেছেন, তিনিই খুন করেছেন।
নিহত সইফুদ্দিনের স্ত্রী বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিল। সোমবার সকালে সইফুদ্দিনের নমাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। তখনই তাঁকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। গুলি তাঁর কাঁধে লাগে। রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময়ে অভিযুক্তদের একজনকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় গণপিটুনি। পিটিয়ে তাঁকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। একজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ ওঠে সিপিএমের দিকে। গ্রামের যে এলাকার বাসিন্দারা সিপিএমের সমর্থক, তাঁদের বাড়়িতে বেপরোয়া লুঠপাট চালাতে থাকেন নিহতের অনুগামীরা। তারপর গ্রামের পরপর ২০-২৫টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কার্যত দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে গোটা গ্রাম। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হয়েছিল ধ্বংসলীলা। কিন্তু দমকল কর্মীদের গ্রামে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সাড়ে তিন ঘণ্টা পর গ্রামে ঢুকতে পারে দমকল। এক মহিলা বলেন. “সকালের খুনের পর এই হামলা। আমাদের সব পুড়ে গিয়েছে। হাড়ি, চাল, কাপড়জামাই পুড়ে গিয়েছে।” বামনগাছির এই গ্রাম ফের স্মৃতি ফেরাল বগটুইয়ের।