কলকাতা: আজ, মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু গঙ্গাসাগর মেলা। মেলার প্রস্তুতি কেমন চলছে, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই গঙ্গাসাগর সফর। সোমবার বিকেলে গঙ্গাসগরের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা। বৈঠকে প্রত্যেকের কাছ থেকে মেলার প্রস্তুতি সংক্রান্ত খবরাখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক শেষেই তিনদিনের গঙ্গাসাগর সফরের কথা জানান মমতা। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ হাওড়ার ডুমুরজলা থেকে রওনা দেবে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। বিকেলে কপিলমুনির আশ্রমে পুজোও দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে বৃহস্পতিবার শহরে ফিরবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোভিডকালে কীভাবে সংক্রমণ প্রতিহত করা যায় সেদিকেই বিশেষ নজর রাজ্য সরকারের। পাশাপাশি তীর্থযাত্রীদের পুণ্য অর্জনে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে প্রশাসনের। ওমিক্রন উদ্বেগেই গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতিকে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। কোভিড পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্স এমনকী দাহঘাটের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে গঙ্গাসাগরে।
জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মেলা চত্বরে ১৯১০ টি শয্য়া সম্পন্ন ১৩ টি হাসপাতাল, ৫ টি আইসোলেশন ওয়ার্ড, ২৩৫ টি শয্যা সম্পন্ন ৪ টি সেফ হোম, ৫০০ টি শয্য়া সম্পন্ন কোভিড হাসপাতাল, কাকদ্বীপ চত্বরে ৬ টি দাহঘাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উট্রামঘাট আর গঙ্গাসাগর দ্বীপের মধ্যে ১৩টি হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। প্রত্যেক হাসপাতালে কোভিড রোগীদের জন্য থাকবে ২৫ টি অ্যাম্বুলেন্স। এ ছাড়াও থাকছে ৩টি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স ও ১টি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। কোনও রোগী গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে প়ড়লে থাকবে গ্রিন করিডোরের ব্যবস্থাও। শিশুদের জন্য থাকছে ৯২ টি শয্য়ার ব্যবস্থা। কাকদ্বীপ ও রুদ্রনগর হাসপাতালেও করোনা আক্রান্ত শিশুদের জন্য বিশেষ শয্য়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তবে এখনই সাগরে নেমে স্নান করার ছাড়পত্র দেয়নি প্রশাসন। আপাতত ই-স্নানেই জোর দেওয়া হচ্ছে। সংক্রমণ প্রতিহত করতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা বলে খবর সূত্রের। করোনা সংক্রমণ এড়াতে বেশ কিছু বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। যেমন ই স্নান, সমুদ্রের জল পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়ে গিয়ে অস্থায়ী বাথরূম তৈরি করে স্নানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। গতবারে ই-স্নান ঘিরে পুর্ণার্থীদের আকর্ষণ তুঙ্গে উঠেছিল। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে জেলা প্রশাসন পরিকল্পনা করছে স্নানের পরিবর্তে ড্রোনের মাধ্যমে আকাশ পথে জল ছিটিয়ে তীর্থ যাত্রীদের ‘শুদ্ধিকরণ’ করাবার ব্যবস্থা করা হবে।
জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ২০টির মতো ড্রোন নেওয়া হবে এই স্নান যাত্রার জন্য। মকর সংক্রান্তির দিন বিভিন্ন পাত্রে সমুদ্রের জল ভরে নিয়ে যাওয়া হবে কপিল মুনির মন্দিরে। সেখানে পুজো করে সেই পাত্র ড্রোনের সঙ্গে আটকে তা উড়িয়ে নিয়ে আসা হবে। একটি নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে সেখানে পুণ্যার্থীদের জড়ো করে আকাশ থেকে স্নান করানোর ব্যবস্থা করা হবে। একেকবারে ১৫০ থেকে ২০০ জন পুণ্যার্থীকে এই পদ্ধতিতে স্নান করানো যাবে বলে আশা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
আরও পড়ুন: Mayor Firhad Hakim: পুর সভার অন্দরেই মঞ্চ, আজ পুরসভার মেয়র হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ফিরহাদ হাকিম