কাশীপুর: মর্মান্তিক ঘটনা। নির্মীয়মান সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে ঢুকে পরিষ্কার করার সময় অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হল মা ও ছেলের। ঘটনায় অসুস্থ আরও এক ছেলে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভাঙড়ের চিনাপুকুর গ্রামে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর থানার চিনাপুকুর গ্রামের ঘটনা। সেখানে করিম মোল্লা নামে এক ব্যক্তি নতুন একতলা বাড়ি তৈরি করছিলেন। সেই বাড়িটির উঠোন লাগোয়া একটি সেপটিক ট্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে। কয়েকদিন আগে ওই ট্যাঙ্কের ছাদ ঢালাই হয়।
এরপর মঙ্গলবার সকাল বেলা স্থানী এক রাজমিস্ত্রি আসেন ছাদ থেকে তক্তা খোলার জন্য। কিন্তু তিনি ট্যাঙ্কে নামার পর দেখেন নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। সেই কারণে উপরে উঠে এসে বাড়ির মালিককে জানান যে তিনি ওই তক্তা খুলবেন না। তার পরিবর্তে কিছু টাকা দাবি করেন তিনি।
যদিও, পরিবারের লোকজন এ প্রস্তাবে রাজি হননি। তখনই তক্তা খোলার জন্য একটি শাবল নিয়ে ম্যানহোলের মুখ দিয়ে নিচে নামেন ওই বাড়ির ছেলে জাহাঙ্গির মোল্লা (২৮)। তাঁকে সাহায্য করতে নিচে নামেন তাঁর আর এক ভাই সাদ্দাম মোল্লা (২৫)। এবার নিচে নামার পর অক্সিজেনের অভাব বোধ করেন তাঁরা। বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে ট্যাঙ্ক থেকে আর উপরে উঠতে পারছিলেন না। তখন তাঁদের মা নিচে নামেন ছেলেদের বাঁচাতে।
এরপরই ওই পরিবারের বাকি সদস্যরা চিৎকার শুরু করে দিলে পাড়ার লোক জড়ো হয়ে যায়। খবর যায় কাশীপুর থানা ও বানতলা দমকল কেন্দ্রে। যদিও দমকল আসার আগে পুলিশ স্থানীয় একটি পে লোডার জোগাড় করে সেটি দিয়ে সেপটিক ট্যাঙ্কের দেওয়াল ভেঙে দেয়। তারপর ওই তিনজনকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত বলে ঘোষণ করেন। জাহাঙ্গির প্রাণে বেঁচে গেলেও রোশনারা ও সাদ্দাম মারা যান।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম বলেন, ‘এটা খুব মর্মান্তিক ঘটনা। ওদের নিজেদের বুদ্ধির ভুলে এই ঘটনা ঘটেছে। কীভাবে অসহায় পরিবারের হাতে আর্থিক সাহয্য তুলে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।’