দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভোর রাতেও কেন ঘরের আলো জ্বলছে? তবে কি মেয়ে এখনও পড়াশোনা করছে, জেগে রয়েছে? বাথরুমে যাওয়ার পথে মেয়ের ঘরে উঁকি দিতেই পায়ের তলার মাটি সরে গেল বাবার। সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে মেয়ে। পাশে পড়ে একটা কাগজ। তাতে হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা অনেক কিছু আর একটা ফোন নম্বর। মেয়ের ভিতর যে ঝড় উঠেছিল, তা এক ফোঁটাও আঁচ করতে পারেননি বাবা-মা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মঘাতী সাউথ পয়েন্ট স্কুলের কৃতী ছাত্রী। মৃত ছাত্রীর নাম সাত্বিকা মজুমদার। এবার তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট। ঘটনাটি ঘটেছে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার রুমঝুম পার্কে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত্বিকা সোনারপুর ব্লকের খেয়াদহ দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের মেয়ে। বাবা ও মায়ের একমাত্র মেয়ে সাত্বিকা। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ভালো পড়াশোনা ও মিষ্টি ব্যবহারে এলাকার সকলের প্রিয় ছিল সে।
সাত্বিকার বাবা জানান, তাঁর মেয়েকে বৃহস্পতিবার রাতেই পড়ান তিনি। তখনও মেয়ের সঙ্গে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়। সে সময়েও মেয়েকে দেখে কিছুই বুঝতে পারেননি তিনি। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর শুয়েও পড়েন। ভোর রাতে উঠে দেখেন মেয়ের ঘরের আলো জ্বলছে, তখনই গিয়ে দেখেন সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে তাঁর মেয়ে।
খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানায়। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশে একটি সুইসাইড নোট ছিল। ছাত্রীর বাবা বলেন, “আমি বলেছিলাম ওকে, তোর যাকে পছন্দ, তাকেই আমি মেনে নেব। হিন্দিতে আর ইংরাজিতে চিঠি লিখে গিয়েছে। একটা নম্বর লেখা ছিল। আমাকে বলল, ওই ছেলেকে ফোন করে আসতে বলো। আমাকে যেন দেখে যায়। মাকে দেখো তুমি।”
জানা গিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের একটি ছেলের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ধীরে ধীরে প্রেম হয়। ছেলেটি তার কাছে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। ছেলেটির ফোন নম্বরও লিখে গিয়েছে সুইসাইড নোটে। সাত্বিকার ফোন ও সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।