দক্ষিণ ২৪ পরগনা: লাগাতার বিক্ষোভের (Protest) জেরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড়ের পোলেরহাটের ২ নম্বর পঞ্চায়েত। অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সরানোর দাবিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখান পরিবেশ রক্ষা কমিটির সদস্যরা। চলতি মাসেই এই পঞ্চায়েতে ভাঙচুরের পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের ব্যাপক মারধরের অভিযোগ ওঠে। সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের নিরাপত্তার দাবিতেই ব্লক আধিকারিকের কাছে একটি ডেপুটেশন জমা দেন। সেই মতোই পুলিশ ক্য়াম্প তৈরি হয়। মঙ্গলবার, এই ক্যাম্প সরানোর দাবিতেই বিক্ষোভে (Protest) নামেন পরিবেশ রক্ষা কমিটির কর্মীরা।
এদিন, পরিবেশ রক্ষা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান জানান, পঞ্চায়েতে পুলিশ ক্য়াম্প হলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়বে। পঞ্চায়েত ও পুলিশ যৌথভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দেবে। ভুক্তভোগী হবেন সাধারণ মানুষ। মির্জা হাসান বলেন, “মানুষ পঞ্চায়েতে আসেন নিজের প্রয়োজন পাওনা বুঝে নিতে। কিন্তু, পুলিশ দিয়ে পঞ্চায়েত চলে না। এতে দুর্নীতি হবে। মানুষ ন্যায় পাবে না। তাই আমরা বিক্ষোভে (Protest) নেমেছি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্প না সরানো হলে আমরা আরও বড় আন্দোলনের পথে নামব।” প্রায় টানা তিনঘণ্টা তাদের বিক্ষোভ চলার পর অবশেষে প্রশাসনিক আশ্বাস পেয়ে সেই বিক্ষোভ উঠে যায়। যদিও, এই ঘটনায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসে পোলেরহাট পঞ্চায়েতে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল পরিবেশ রক্ষা কমিটির। সেই হামলার ঘটনায় আহত হন ভাঙড়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকীমুল ইসলাম। তাঁকেও গুরুতর মারধর করা হয়। প্রসঙ্গত, বরাবর এই পোলেরহাটে নিজেদের ‘ক্ষমতা’ অক্ষুণ্ণ রেখেছে পরিবেশ রক্ষা কমিটি। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাঁচটি নির্দল আসনেও লড়েছিল এই কমিটি। সূত্রের খবর, পোলেরহাট পঞ্চায়েতে ১৬ টি আসনের মধ্যে ৫টি পরিবেশ রক্ষা কমিটির। বাকি ১১ টি তৃণমূলের। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও কখনওই এই পঞ্চায়েতে ‘আসর’ জমাতে পারেনি তৃণমূল। কিন্তু, ২০১৯-এর পর থেকে ছবি বদলাতে শুরু করে। ২০২১- এ বিধানসভা নির্বাচনের কিছু সময় পরেই পোলেরহাট পঞ্চায়েত ক্ষমতায় আসে তৃণমূলের। এই ‘ক্ষমতায়ন’ মেনে নিতে পারেনি পরিবেশ রক্ষা কমিটি।
পাওয়ার গ্রিড বিরোধী জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিবেশ রক্ষা কমিটি একদা তাদের শাসন বজায় রাখতে শুরু করলেও বর্তমানে তা কেবল রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারক মাত্র। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, পাওয়ার গ্রিডের সেই আন্দোলনের পর নতুন কোনও রাজনৈতিক পালক পরিবেশ রক্ষা কমিটির মুকুটে যোগ হয়নি। ফলে, এযাবৎ পেয়ে আসা ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া তারা। পঞ্চায়েতে পুলিশ ক্যাম্পের উপস্থিতির পেছনে পরোক্ষে তৃণমূল সদস্যদের হাত রয়েছে বলেই দাবি করছে তারা। আদপে, পঞ্চায়েতের রাশ নিজেদের হাতে রাখতেই এই বিক্ষোভ পরিবেশ রক্ষা কমিটির এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আরও পড়ুন: নাকের ডগায় থানা, পুরসভার ভেতরে চলল গুলি! ফের উত্তপ্ত ভাটপাড়া