Post Poll Violence: স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত চন্দনা, হিংসা তদন্তে আরও একটি মামলা দায়ের CBI-র
CBI: স্বরূপের পাশাপাশি চন্দনার উপরেও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে লাঠি, রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। এমনকী ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ।
কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে ফের বাড়ল এফআইআরের সংখ্যা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালি গ্রামে বিজেপি কর্মীর স্ত্রী চন্দনা হালদারকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগে আরও একটি এফআইআর দায়ের করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। এই মুহূর্তে হিংসা তদন্তে সিবিআইেয়র দায়ের করা মোট এফআইআরের (FIR) সংখ্যা দাঁড়াল ৩৬।
সূত্রের খবর, গত ২ জুলাই, নোদাখালির দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামে মাঠ থেকে কাজ সেরে ফেরার পথে বিজেপি (BJP) কর্মী স্বরূপ হালদারের উপর চড়াও হয় বেশ কিছু দুষ্কৃতী। সেইসময়, স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে আসেন চন্দনা। স্বরূপের পাশাপাশি চন্দনার উপরেও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে লাঠি, রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। এমনকী ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম চন্দনাকে প্রথমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হলেও পরে তাঁকে কলকাতার একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই চন্দনার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় বিজেপি পূর্বেই তৃণমূল (TMC) আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে আঙুল তুলেছিল। ঘটনায় ১৯ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও ছিলেন। পরে অবশ্য তাঁরা জামিনে মুক্ত হয়ে যান।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তভার নেওয়ার পরেই ‘স্পট ভিজিট’ শুরু করেন তদন্তকারীরা। কথা বলেন মৃতার পরিজনের সঙ্গেও। ২ জুলাইয়ের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। এরপরেই, চন্দনা হত্যা-মামলায় একটি এফআইআর দায়ের করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার প্রতিনিধি দল। পূর্বে অভিযুক্ত ১৯ জনের বিরুদ্ধেই সেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ নম্বর ধারায় খুন, খুনের চেষ্টা, অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও অপরাধমূলক অস্ত্র আইনে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে।
ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে রাজ্যে এই মুহূর্তে সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইয়ের সংখ্য়া ৩৬। যত সময় এগোচ্ছে ততই বাড়ছে মামলার সংখ্যা। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) সুপারিশকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক তরজা। পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। কিন্তু, সেই মামলায় জোর ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাগুলির তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর হাতে। অন্যদিকে, বাকি হিংসার ঘটনার তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের তিন সদস্যের একটি সিট গঠন করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই হিংসা তদন্তে ৪টি চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। সম্প্রতি, নন্দীগ্রামে, বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি খুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজেন্ট তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।
প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও। বেশিরভাগ ডিআইজি ও এসপি পদমর্যাদার কর্তা। রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। গত শনিবার আরও ১০টি এফআইআর দায়ের করা হয়। ২৯ অগস্ট আরও সাতটি এফআইআর দায়ের করা হয়। পরে আরও দুদফায় চারটি ও তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়।
যেদিন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করা হল, সেদিনই সিটের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হল কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরকে। বিশেষ তদন্তকারী দল বা এই সিটে ১০ জন দক্ষ আইপিএস আধিকারিক রয়েছেন। যারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁরা মূলত সিটের সদস্য। সেই দলের চেয়ারম্যান কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। হিংসা তদন্তের মামলায় কোনও পারিশ্রমিক নেবেন না তিনি বলেই জানিয়েছেন চেল্লুর।
আরও পড়ুন: Post Poll Violence: ‘পুরোটাই শুভেন্দুর চাল’, অধিকারী পুত্রকে তোপ, সিবিআইকে সহযোগিতা সুফিয়ানের