ডায়মন্ড হারবার: ২০০৯ সালের প্রাইমারি পরীক্ষার্থীরা নিয়োগের দাবিতে আবারও ধরনায়। ডায়মন্ড হারবারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ বা ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের (DPSC) বাইরে চারদিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। নিয়োগপত্র না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে বলে জানান। এদিন খালি গায়ে, মাথা মুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা।
২০০৯ সালে প্রাথমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। পরের বছর জেলা ভিত্তিক পরীক্ষাও হয়। সেই সময় টেট ছিল না। ছিল না প্রাথমিকে চাকরির জন্য প্রশিক্ষণের অত্যাবশ্যকতাও। তৃণমূল এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর টেট চালু হয়। অভিযোগ, সে সময় ২০০৯ সালের পরীক্ষা বাতিল করে দেয় রাজ্য সরকার। ২০১৪ সালে লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি হয় ইন্টারভিউ।
এ নিয়ে মামলা হয় হাইকোর্টে। রাজ্য সরকার পরীক্ষা ও নিয়োগ বাতিলের যে সিদ্ধান্তের কথা বলেছিল, তা খারিজ করে দেয় কোর্ট। এরপরই নিয়োগের বিষয়েও বলা হয়। রাইহান মোল্লা নামে এক চাকরি প্রার্থী বলেন, “কোর্ট কেসের কথা বলে নিয়োগ আটকে রাখা হচ্ছে। ২০০৯ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়ে বসে আছি। চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিতে বিলম্ব করছেন। কুণাল ঘোষ এসেছিলেন, আশ্বস্ত করে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন আইনি প্রক্রিয়া মেনে সবটা করা হবে। আমরাও চাই হলফনামা জমা দিয়ে বিষয়টার সমাধান হোক।”
কিন্তু মাথা ন্যাড়া করে কেন প্রতিবাদ? চাকরিপ্রার্থী রাইহানের বক্তব্য, “চুল তো বাহ্যিক সৌন্দর্যটুকু ধরে রাখে। আমাদের আর সৌন্দর্যে কী হবে? দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে যে যন্ত্রণা আমরা বয়ে চলেছি, তাতে আর বাহ্যিক সৌন্দর্যের দরকার নেই। দু’ মুঠো ভাতই আমাদের নিশ্চিত নয়।”
আরেক চাকরিপ্রার্থী তাসিম মালিকের বক্তব্য, “চারদিন ধরে ধরনা চলছে। অযোগ্যরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়ে যাচ্ছে। আর যোগ্যরা পথে বসে আছে। হাইকোর্ট থেকে অর্ডার বেরোল। তারপরও জটিলতা কাটছে না। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা সুপ্রিম কোর্টে কেস করেছে। তাতে একটা স্টে অর্ডার আছে। তাঁরা অগ্রাধিকার চাইছেন। সরকার চাইলে অন্য়ায্য দাবির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। সরকার হলফনামা দিক।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান অজিত নায়েকের বক্তব্য, “১৮৩৪ শূন্যপদের ঘোষণা হয়েছিল। ২টি দফায় আমরা তাঁদের নিয়োগ দিয়েছি। কমিশনার অব স্কুল এডুকেশন এই প্যানেল অনুমোদন করেছে। আর ৫ সেপ্টেম্বর আমরা সুপ্রিম কোর্টে একটা হলফনামা জমা দিয়েছি।”