Sonarpur TMC: ‘কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বাড়িতে আসেন’, পাপিয়ার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক প্রতীক
Rajpur Sonarpur: পাপিয়ার দাবি, প্রতীক তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হওয়ায় এত কিছু। পাপিয়ার বক্তব্য, "আমাকে বদনাম করবে বলেই এখন আমি বাইরে থাকলে হানিমুন করে আসছি আর ঘরে থাকলে আমার বিয়ে হচ্ছে। আমাকে বলা হয়েছে ওয়ার্ডে থাকতে দেবো না এমনভাবে বদনাম রটাব। এসব তারই বহিঃপ্রকাশ।"
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার। দলেরই যুবনেতার বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ, তাঁকে ওয়ার্ড অফিসে বসতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না। এবার পাল্টা চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন ওই যুবনেতা প্রতীক দে। তাঁর দাবি, কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে পাপিয়া সম্পর্কে জড়ান। প্রতীক জানান, কলকাতা পুলিশের ওই আধিকারিককে দিয়ে এলাকায় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন পাপিয়া ৷ সাধারণ বাসিন্দাদের ভয়ও দেখাচ্ছিলেন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার। এলাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা তোলারও চেষ্টা করেন পাপিয়া। যদিও পাপিয়া এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হুমকি, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এমনকী ওয়ার্ড ও দলীয় কার্যালয়ে বসতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতীক দের বিরুদ্ধে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সরব হন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুরে পাপিয়ার আদি বাড়ি। তাঁর বাবা কলকাতা পুলিশের কর্মী ৷ সেই সূত্রেই পাপিয়ারা রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে জায়গা কিনে বসবাস শুরু করেন। ২০১৬ সালে এই ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর হওয়ার সুবাদে ওয়ার্ডের সমস্ত কাজ করতেন প্রতীক। সাধারণ মানুষেরও যাতায়াত ছিল তাঁর কাছে ৷ পুরসভার উদ্যোগে পাপিয়ার বাড়ির সামনে পুরসভার ড্রেনের তদারকির কাজ করতে গিয়ে প্রথম পরিচয় তাঁদের বলে জানান এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। ফেসবুকেও আলাপচারিতা হয়। দলীয় সম্পর্ক ক্রমেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গায় যায় বলেই জানান এলাকার লোকজন।
এরপর রাজনীতিতে আসা, ভোটে লড়াই, একাধিক অনুষ্ঠানেও তাঁদের দেখা যেত। প্রতীকের দাবি, পুজোর পর থেকেই তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। দেশের বাড়ি যাওয়ার নাম করে কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন পাপিয়া। প্রতীক দে বলেন, “ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি না করাই ভাল। প্রার্থী কীভাবে হয়েছেন সকলেই জানেন। উনি অস্বীকার করতেই পারেন। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে আমি মাথা পেতে নেব। দল তদন্ত করুক। তবে এখানে দলের যারা আছে সকলেই সবটা বলতে পারবে। প্রত্যেক উইকেন্ডে ট্রিপে যান। এখান থেকেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। কলকাতা পুলিশের একজন আধিকারিক ওনার বাড়িতে যান, দীর্ঘ সময় কাটান। তাঁর জোরেই পুরমাতা ১ লক্ষ টাকা তুলে দিতে বলেন ওয়ার্ড থেকে। না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন। ২০১৬ থেকে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক। এখন যদি উনি অস্বীকার করেন, করতে পারেন। ২০০০ সাল থেকে আমার রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, প্রত্যেকের সঙ্গে আমার হবু স্ত্রী বলেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম।”
যদিও পাপিয়ার দাবি, প্রতীক তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হওয়ায় এত কিছু। পাপিয়ার বক্তব্য, “প্রতীক দে কেন অনেকেই এমন কথা বলতে পারেন। ১ লক্ষ কেন ৫ লক্ষ দাবি করেছি তাও বলতে পারেন। তবে কোনও একজনকে প্রমাণ হিসাবে এনে দেখান। একজনের কাছে বলেছি সেই প্রমাণই দেখাক। তবে আমাকে যে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছিল, তার প্রমাণ আমি দিতে পারব। আমাকে ৫০ হাজার টাকা করে মাসে দেওয়া হবে বলেছিল। আর আমাকে বদনাম করবে বলেই এখন আমি বাইরে থাকলে হানিমুন করে আসছি আর ঘরে থাকলে আমার বিয়ে হচ্ছে। আমাকে বলা হয়েছে ওয়ার্ডে থাকতে দেবো না এমনভাবে বদনাম রটাব। এসব তারই বহিঃপ্রকাশ।”
এ বিষয়ে রাজপুর সোনারপুরের পুরপ্রধান পল্লব দাস বলেন, “আগে জানি বিষয়টা কী তারপর তো কিছু বলব। আমার কাছে নিরাপত্তাহীনতা বা এ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগই আসেনি। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তা তো পুলিশ বুঝবে। পার্টি অফিস বা ওয়ার্ড অফিসও খোলা। অনেক মানুষই তো যান। হতে পারে কোনও এক দু’দিন কোনও অসুবিধার জন্য খোলা হয়নি। আমাদের দুয়ারে সরকার চলছে। মানুষ তো পরিষেবাও পাচ্ছে।”