ভাঙড়: দলে থেকে দলের বিরুদ্ধাচরণ করা যাবে না, এই বার্তা অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় দুজনেই দিয়েছেন। দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দেওয়ার নিদানও দিতে শোনা গিয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। তাই বলে জুতোপেটা! এমন নিদানই দিতে শোনা গেল তৃণমূলের সাংসদ ও বিধায়ককে। ভাঙড়ে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে এ কথা বলেছেন শওকত মোল্লা, সায়নী ঘোষ।
ভাঙড়ের মহাবিদ্যালের মাঠে বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে তৃণমূলের একটি সভা ছিল। সেখানে শওকত ও সায়নী দলের নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়েছেন। তবে থাপ্পড় বা জুতোপেটার মতো নিদান দেওয়ার প্রয়োজন পড়ল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রবিবারের ওই সভা থেকে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা জানান ভাঙড়ে গরিব মানুষের জন্য ১৭ হাজার ঘর অনুমোদন পেয়েছে। তার জন্য সমীক্ষা চলছে। ঘর দেওয়ার জন্য যাতে কেউ কোনও টাকা না নেয়, সেই বিষয়েই বার্তা দিয়েছেন শওকত মোল্লা। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাদের নেতাদের অনুরোধ করছি যে আপনারা কোনও গরিব মানুষের কাছ থেকে ঘরের জন্য কোনও টাকা নেবেন না। আর যদি কোনও নেতা টাকা চাইতে যায়, তাহলে তার গালে থাপ্পড় মারবেন। তারপর আমাদের খবর দেবেন।”
শওকতের থেকে আরও একধাপ এগিয়ে সায়নী ঘোষ দাবি করেন, শুধু থাপ্পড় মারলে হবে না, জুতোপেটা করতে হবে। প্রকাশ্যে মঞ্চ থেকে যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ বলেন, যারা দলকে বদনাম করার চেষ্টা করছে এবং যারা দলের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করার চেষ্টা করছে, মানুষকে পরিষেবা দেবে বলে তাদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের শুধু থাপ্পড় মারলে হবে না। জুতোপেটা করতে হবে। যারা নিজেদের পকেট ভরবে বলে তৃণমূল করছে, তাদের স্থান তৃণমূলে নেই।
দলীয় নেতাদের এভাবে কড়া বার্তা দেওয়ার বিষয়টি অনেকে ভাল বলে মনে করলেও বিরোধীরা বলছেন এসব ‘লোক দেখানো’ কথা। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, “শওকত মোল্লা আজ সাধু হয়ে গিয়েছেন। তৃণমূলের নেতাকে তৃণমূলের লোকই মারবে! এ সব কি নাটক হচ্ছে!” আর সায়নীর সম্পত্তি কোথা থেকে বৃদ্ধি পেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সজল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, যাদের ইডি-সিবিআই ডেকে পাঠায়, তারা মাইকের সামনে দাঁড়ালে সব সাধু হয়ে যায়। সিপিএম নেতা সৃজন ভট্টাচার্যও কটাক্ষ করে বলেন, “ওটা মুখে বলতে হয়, বলেছেন। ওটা বলার অর্থ হল, আরও বেশি করে খাবি।”