বারুইপুর : দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়াকারকে (Shraddha Walker) খুন করে তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করে দিয়েছেন তাঁর প্রেমিক আফতাব। সেই ঘটনায় কার্যত শিউরে উঠছে গোটা দেশ। এবার সেই ঘটনার ছায়া এরাজ্যে। প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীকে খুন (murder) করার অভিযোগ উঠল তাঁরই স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে। জেরায় নিজেরাই স্বীকার করেছেন খুন করার কথা। শুধু খুন করাই নয়, ওই ব্যক্তির দেহ করাত দিয়ে পাঁচ টুকরো করে ফেলে দিয়ে আসেন তাঁরাই। বৃহস্পতিবার রাতে সেই দেহের একটি অংশ উদ্ধার হওয়ায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় বারুইপুরে (Baruipur)। পুকুরে ভাসছিল দেহের ওপরের অংশ। হাত-পা কিছুই ছিল না। তারপরই জানা গেল এই হাড়হিম করা তথ্য। ইতিমধ্যেই স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে বারুইপুর থানার মল্লিকপুর রোডের ডিহি মদনমল্য গ্রামের একটি পুকুরে দেহের অংশ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তা দেখে পুলিশকে খবর দেন। দেহ শণাক্ত হলে জানা যায়, সেটা প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দেহ। বারুইপুর থানা এলাকাতেই তাঁর বাড়ি। কীভাবে মৃত্যু হল ওই ব্যক্তি, তা জানতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। থানায় আসেন উজ্জ্বল চক্রবর্তীর স্ত্রী ও ছেলে।
এরপর পুলিশেক প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, নিজের ছেলেই খুন করেছেন উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে। শনিবারই মৃতের স্ত্রী শ্যামলী চক্রবর্তী ও ছেলে জয় চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁরা বারুইপুরে শালেরপুরের প্রান্তিক আবাসনের বাসিন্দা।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মদের নেশায় বুঁদ থাকতেন উজ্জ্বল চক্রবর্তী, আর তা নিয়ে বাড়িতে অশান্তি হল প্রায়ই। পলিটেকনিক নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন তাঁর ছেলে জয়। গত ১৪ নভেম্বর, সোমবার ছেলের পড়ার খরচ নিয়ে বচসা হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। এরপরই ছেলে বাবাকে গলা টিপে খুন করেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ জানিয়েছে, খুন করার পরই ধারাল করাত দিয়ে দেহ পাঁচ টুকরো করে ফেলেন মা ও ছেলে। রাতে দুজনে মিলে দেহ ফেলে আসেন আশপাশের বিভিন্ন জায়গায়। ৫০০ থেকে ৮০০ মিটারের মধ্যেই ফেলে আসা হয় সেই দেহ। পরের দিন বারুইপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁরা, যাতে খুনের ব্যাপারে কোনও সন্দেহ না হয়।
গত বৃহস্পতিবার বুকের অংশ উদ্ধার করা হয়েছিল। শনিবার দুটি পা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। বাকি অংশের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় দিল্লি-কাণ্ডের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন এলাকাবাসী।