ভাঙড়: আরাবুলহীন পঞ্চায়েত সমিতির দায়িত্বে সহ-সভাপতি সোনালি বাছার। সূত্রের খবর, সোমবার চার্জ নেবেন সোনালি। চার মাস ধরে জেলবন্দি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলাম। তাঁর অনুপস্থিতিতে কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। সমিতির সভা পরিচালনায় যেমন অসুবিধা হচ্ছে তেমন তহবিল খরচেও সমস্যায় পড়ছে পঞ্চায়েত সমিতি। তাই সভাপতির ‘চার্জ’ দেওয়া হচ্ছে সহ সভাপতি সোনালি বাছারকে। তিনিই ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতির পদ একসঙ্গে সামলাবেন। লোকসভা ভোটে ভাঙড় বিধানসভায় ৪২ হাজার লিড দিয়েছে তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশের মতে, সেই জয়ের কাণ্ডারি ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূল পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা। শওকত বলেন, “সভাপতি দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকায় পঞ্চায়েত সমিতির সব কাজকর্ম চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। তাই সহ সভাপতিকে সভাপতির চার্জ দেওয়া হবে বলে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বেনজির হিংসার ছবি দেখা গিয়েছিল ভাঙড়ে। ঝরেছিল রক্ত, গিয়েছিল প্রাণ। সেই ভোটে জিতে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন আরাবুল ইসলাম। গত বছর ১২ অগস্ট সভাপতি হিসাবে তিনি শপথ নিয়েছিলেন। সবকিছু ঠিকঠাক চললেও গত ৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতা পুলিশের একমাস পূর্তি উপলক্ষ্যে পুরানো একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয় আরাবুল ইসলামকে। তারপর থেকে টানা চারমাস তিনি জেলবন্দি। লোকসভা ভোটের জন্য গত তিন মাস উন্নয়নমূলক কাজকর্ম বন্ধ থাকলেও ভোট মিটতেই সমস্ত কাজকর্ম শুরু হবে বলে খবর প্রশাসন সূত্রে। এমন পরিস্থিতিতে আরাবুলের গরহাজিরাতে সমস্যা হচ্ছে সমিতির স্বাভাবিক কাজকর্মে। তাই এমন সির্দ্ধান্ত নিয়েছে দল, এমনটাই খবর তৃণমূল সূত্রে।
তবে আরাবুল অনুগামীদের আশঙ্কা আরাবুল জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরলেও হয়তো তাঁকে আর সভাপতির পদে রাখা হবে না। কারণ,পঞ্চায়েত ভোটে বিজয়গঞ্জ বাজারে আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনায় একাধিক তৃণমূল নেতার নাম এফআইআর-এ থাকলেও সবাইকে ছেড়ে কেবল আরাবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক পদ থেকে সরানো হয়েছিল আরাবুলকে। এবার ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হল। তবে কি ভাঙড়ে আরাবুল জমানার অবসান হতে চলেছে ? সেই প্রশ্ন আরও একবার নতুন করে উঠেই গেল।