দক্ষিণ ২৪ পরগনা: মালদহের মহিলাদের বিবস্ত্র কাণ্ডে রাজনৈতিক চাপানউতোর রাজ্যজুড়ে। তার মধ্যেই ভয়ঙ্কর অভিযোগ দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এক নাবালিকা ছাত্রীকে স্কুলের শৌচালয়ে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক পার্শ্ব শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এমনকী ঘটনা যাতে থানা পর্যন্ত না গড়ায়, তার জন্য তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ তুলল নির্যাতিতার পরিবার। যদিও এই অভিযোগ নিয়ে কোনও তৃণমূল নেতাই মুখ খুলতে রাজি হননি।
নির্যাতিতার পরিবারের বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ২১ জুলাইয়ের। ওই ছাত্রী স্কুলের শৌচালয়ে গিয়েছিল। অভিযোগ, সেখানে আটকে রেখেই ধর্ষণ করেন এক পার্শ্ব শিক্ষক। শুধু তাই নয়, অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে শৌচালয়ের ভেতরেই আটকে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যান অভিযুক্ত শিক্ষক।
বাইরে মুখ না খোলার জন্য নির্যাতিতাকে মারধরও করা হয় বলেও অভিযোগ। দীর্ঘক্ষণ ওই ছাত্রীকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু হয়। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, শৌচালয়ের দরজার বাইরে তালা ঝোলানো থাকায়, সন্দেহ হয় অন্যান্য পড়ুয়াদের। শিক্ষক ও পড়ুয়াদের সাহায্যে উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রীকে।
বাড়িতে এসে গোটা বিষয়টি খুলে বলে ছাত্রী। ঘটনার পর প্রধান শিক্ষকের দারস্থ হয় নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার। কিন্তু তিনি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর থেকে নির্যাতিতার পরিবারের ওপর থানায় না যাওয়ার জন্য তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন বলে অভিযোগ।
ছাত্রীর মা বলেন, “আমার মেয়ে শৌচালয়ে গিয়েছিল। তখন ও শৌচালয়ের মধ্যে ঢুকেই ধর্ষণ করে। স্কুলের আমার মেয়ের এক বান্ধবী আমাকে খবর দেয়, যে ওকে তালাবন্ধ করে রেখেছে। আমি স্কুলে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি, কেন তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে। তখন বাকি শিক্ষকরা বিষয়টা জানতে পারেন।”
প্রথমটায় ভয় পেয়ে গিয়েছিল ছাত্রীর পরিবার। রবিবার সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ছাত্রীর বাবার বক্তব্য, “থানায় যাওয়ার পরই আমাদের হুমকি দেওয়া হয়। টিএমসি পার্টির তরফে আমাদের হুমকি দেয়। সব দেখে নেব বলে। আমরা নাকি মিথ্যা বদনাম দিচ্ছি। যারা হুমকি দিচ্ছিল, তাদের এক জনের নাম আমি জানি। এটা সত্যি ঘটনা। আমি মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখাব।”
অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে ঢোলাহাট থানার পুলিশ। ধৃতকে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালত পেশ করা হবে। নির্যাতিতার মেডিকেল করানো হবে কাকদ্বীপ হাসপাতালে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী পক্ষ। বিজেপির জেলা যুব মোর্চার সম্পাদক মহাব্রত দাস বলেন, “একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘটনা ভাবাই যায় না। মালদহের রেশ কাটতে না কাটতেই এই ধরনের ঘটনা। তৃণমূল মণিপুর নিয়ে লাফালাফি করছে। কিন্তু এখানে কী হচ্ছে?”
কাকদ্বীপ ব্লকের সহ সভাপতি সত্যব্রত মাইতি বলেন, “আমি শুনেছি গোটা ঘটনা। তবে এর সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। যেটা রটানো হচ্ছে, সেটা মিথ্যা। আমি খোঁজ নিয়েই দাবি করছি।”