দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ক্রমেই চড়ছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। সদ্যই, টুইটারে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে (Jagdeep Dhankhar) ব্লক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নিজেই সেকথা সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন তিনি। আরও উল্লেখ করেছেন, ‘উপায়ন্তর না দেখে বাধ্য হয়েই’ রাজ্যপালকে টুইটারে ব্লক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে, রাজ্যপালকে অপসারণের দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির দরবারেও সওয়াল করেছেন সংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজ্যপালকে সরান’ এমনই দাবি করেন সুদীপ। এ বার, রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতকে কেন্দ্র করে মন্তব্য বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।
সুজনের কথায়, “রাজ্য বা রাজ্যপাল দুই তরফেই যা হচ্ছে, তা কাম্য নয়। রাজ্যপালকে আমিও সমর্থন করি না। কারণ সব বিষয়ে তাঁর কথা বলা টা মানায় না। কিন্তু, তৃণমূলও চায়, রাজ্যপাল কেবল সরকারের কথাতেই চলবে। তা তো হয় না! রাজ্য ও রাজ্যপাল, কারোরই লক্ষ্মণরেখা পার করা উচিত নয়। একটা সীমা রয়েছে, সবকিছুর। সেই সীমায় থাকা উচিত।”
সোমবার নবান্ন সভাগৃহের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যপাল সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে কার্যত বোমা ফাটান তিনি। বলেন, “তবে আমি বাধ্য হয়ে একটা কাজ করেছি। আমি দুঃখিত এর জন্য। এর জন্য আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। উনি প্রতিদিন একটি করে টুইট করেন। কখনও অফিসারদের গালাগালি দিয়ে, কখনও আমাকে গালিগালি দিয়ে… বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ তুলে, অসাংবিধানিক কথাবার্তা, অনৈতিক কথাবার্তা বলেন। আমাদের নির্দেশ দিতেন ওনার পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের চলতে হবে। পরামর্শ নয়, ওনার নির্দেশ অনুযায়ী চলতে বলতেন। তার মানে, আমরা ওনার চাকর-বাকর আর কি!”
তবে কেবল মুখ্যমন্ত্রীই নন, সোমবারই সংসদে রাজ্যপালের অপসারণের দাবি তোলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “সংসদীয় গণতন্ত্র কি পশ্চিমবঙ্গে আদৌ বেঁচে আছে? এখানে বিরোধীদের জায়গা কোথায়? কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধীদের ডাকা হয় না। বিরোধীদের নির্বাচনে প্রচার করতে দেওয়া হয় না। নির্বাচনে লড়তে দেওয়া হয় না। রাস্তায় নামলেই আমাদের আটকানো হয়। ভয় দেখিয়ে, মামলা দিয়ে, মারপিট করে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়। তাই গণতন্ত্র কতটুকু বেঁচে আছে সেটাই তো সন্দেহের।”
দিলীপের আরও সংযোজন, “যেটুকু আছে, গণতন্ত্র রক্ষায় সাংবিধানিক প্রতিনিধি মাননীয় রাজ্যপাল তিনি এই সরকারে অপকর্ম নিয়ে সরব হন। সেটা হজম করতে পারছেন না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, তাঁর সম্পর্কে খারাপ কথাবার্তা, তাঁকে কালো পতাকা দেখানো, রাস্তা আটকানো চলে। তবে এতকিছু করেও পারছে না বুঝে এখন রাষ্ট্রপতির কাছে একবার শোনাতে। যাতে রাজ্যপালের মুখটা বন্ধ রাখা যায়। আমার মনে হয় যে পথে তৃণমূল হাঁটছে সেটা ঠিক নয়।”