পাথরপ্রতিমা: জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। এই নিয়েই দিনযাপন সুন্দরবন প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে। সুন্দরবনের আনাচে কানাচে কান পাতলেই শোনা যায় বাঘ-বিধবাদের চাপা কান্না। সুন্দরবনবাসীদের একটি বড় অংশের মানুষ মৎস্যজীবী। নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন নদীতে, খাঁড়িতে। মাছ-কাঁকড়ার খোঁজে। পাথরপ্রতিমার বছর ছাব্বিশের গোপাল মল্লিকও গিয়েছিলেন জগদ্দল নদীতে কাঁকড়া ধরতে। নদীর ধারে জঙ্গলের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসেছিল দক্ষিণরায়। মুহূর্তের অসতর্কতা, আর তাতেই সব শেষ। চোখের নিমেষে বাঘে তুলে নিয়ে গেল গোপালকে।
পাথরপ্রতিমা ব্লকের জি প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সত্যদাসপুর গ্রামে বাড়ি গোপাল মল্লিকের। ঘরে বউ রয়েছে। দুই মেয়ে, এক ছেলে রয়েছে। নদীতে কাঁকড়া ধরেই সংসার চলে। গত ১০ জুন ছ’জনের একটি দল গিয়েছিল জগদ্দল নদীতে কাঁকড়া ধরতে। সেই দলেই ছিলেন গোপালও। গতকাল দুপুরে কলস জঙ্গল লাগোয়া জগদ্দল নদীতে কাঁকড়া ধরছিলেন তাঁরা। সেই সময়েই পিছন থেকে গোপালের উপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ঘাড়ে মোক্ষম কামড়, তারপর টানতে টানতে নিয়ে যায় জঙ্গলের ভিতরে। গোপালের সঙ্গীরা অনেক চেষ্টা করলেও বাঘের মুখ থেকে ছাড়াতে পারেননি তাঁকে।
গতকালের এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর গ্রামে ফিরে আসেন বাকিরা। গোপালের পরিবারকে জানানো হয় গোটা ঘটনা। বাঘে টেনে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েই ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা। শনিবার দুপুরে গোবর্ধনপুর উপকূল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন গোপাল মল্লিকের স্ত্রী পার্বতী মল্লিক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গোপালের কোনও সন্ধান মেলেনি।