ডায়মন্ড হারবার: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যিনি হারিয়েছেন, তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রতিপক্ষ বলে মনে করেন না। এমনটা বারবারই দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে সেই অভিষেকের কেন্দ্রে গিয়ে সেখানকার সাংসদকে পদে পদে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা। কয়লা কিংবা বালি পাচারকাণ্ডে অভিষেকের যোগ থাকার অভিযোগ, আগেও শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর মুখে। তবে আক্রমণের ঝাঁঝ সপ্তমে চড়িয়ে ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে এদিন অভিষেককে ‘সর্বভুক’ বললেন শুভেন্দু।
এদিন সকাল থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় পথে নেমেছেন তৃণমূল কর্মীরা। বিজেপি কর্মীদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখানোরও অভিযোগ ওঠে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিনের সভা থেকে শুভেন্দু দাবি করেন, বিভিন্ন খাতে মোদী সরকারের তরফে যে সব টাকা আসে, তা লুঠ হয়ে যায়, মানুষের হাতে পৌঁছয় না।
শাসক দলকে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন, ‘লুঠ করেছে, এরা লুঠ করেছে।’ আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে লাইটহাউস মাঠে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘এখানকার যিনি সাংসদ, তিনি সর্বভুক। তিনি কী কী খান? কয়লা খান, বালি খান, মদের বোতল খান, স্কুলের ইউনিফর্মের টাকা খান।’ মূলত দুর্নীতি ইস্যুতেই অভিষেককে এদিন চরম নিশানা করেন শুভেন্দু। একইসঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘চিন্তা নেই দুর্নীতি করলে কেউ ছাড় পাবে না।’ এদিন সভার শুরুতেই তিনি দাবি করেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের হোয়াটসঅ্য়াপে কথোপকথনের প্রমাণ রয়েছে।
এদিন কাঁথির সভা থেকে দুর্নীতি ইস্য়ুতে শুভেন্দুকেও পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘কিছু না করে চার বছর যদি জেলে যেতে হয় , তাহলে আপনার তো ৪০ বছর জেল হওয়া উচিত।’ খাতা নিয়ে এসে দুর্নীতির হিসেব মেলাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
উল্লেখ্য, কয়লা পাচারকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁকে একাধিকার ইডি দফতরে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তাই সেই কয়লা পাচার নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিষেককে কটাক্ষ করে থাকেন শুভেন্দু।
তবে শুধু এই একটা ইস্যুতেই নয়, পুলিশের ওপর প্রভাব খাটানো থেকে বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা, নানা বিষয়ে এদিন তোপ দাগেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, ২০১৬ সাল পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবারে ভাল ভাবে ভোট হয়েছে। তারপর অভিষেক ও তাঁর লোকজন ভোট করতে দেয় না। কর্মীদের উৎসাহ দিয়ে এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘এবার আমি খেলা দেখাব। আপনারা প্রার্থী জোগাড় করুন। মনোনয়নে জমা দেওয়ার দায়িত্ব আমার।’