দক্ষিণ ২৪ পরগনা: অভাবের সংসার। প্রায় প্রতিদিনই লেগে থাকত অশান্তি। কিছুতেই তা থামছিল না। এরপরই চরম পদক্ষেপ। বিবাদের জেরে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতি হলেন দম্পতি।
কাকদ্বীপের স্টিমারঘাট এলাকার বাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। জানা গিয়েছে, জখম ওই দম্পতির নাম শংকরলাল শর্মা ও সুপর্ণা শর্মাকে উদ্ধার করে প্রথমে কাকদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
জানা গিয়েছে, শংকরলাল পেশায় মৎস্যজীবী। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন তিনি। সংসারে অভাব-অনটন নিয়ে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে প্রায়শই গন্ডগোল লেগে থাকত। এরপর শুক্রবার দুপুরে বাড়ির মধ্যে থেকে দুজনকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। বাড়ির বেশকিছু সামগ্রীও ইতিমধ্যে পুড়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিবাদের জেরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
প্রসঙ্গত, জেলা থেকে আরও এক মর্মান্তিক খবর সামনে এসেছে। গতকাল সন্ধ্যা তখন সাড়ে সাতটা নাগাদ স্টেশনে একটি শিশুকে বসে থাকতে দেখেছিলেন মহিলা হকার। ঘড়ির কাঁটা এগোয়। শিশুটি কান্না জুড়ে দেয়। সময়ের সঙ্গে বাড়ে অনিশ্চয়তা। শেষমেশ এই মহিলা ব্যবসায়ী এগিয়ে আসেন। শিশুটিকে কোলে তুলে খোঁজ করতে থাকেন তার মায়ের। মা না হোক অন্য কেউ তো থাকবে নিশ্চয়ই প্ল্যাটফর্মে! কিন্তু নাহ, শিশুটির আপনজন কেউই ছিল না সেখানে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর আসেনওনি। শেষমেশ ওই হকার শিশুকে কোলে আঁকড়েই হাজির হন পাশেই ডায়মন্ড হারবার জিআরপিতে। ততক্ষণ খবর চাউর হয়েছে। শিশুটিকে ঘিরে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওই মহিলা ব্যবসায়ীর কথায়, “শিশুটিকে অনেকক্ষণ বসে থাকতে দেখেছিলাম। হাতে খাবারের একটা প্যাকেট ছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম মা চলে আসবে। কিন্তু আসেনি। খুবই কান্না শুরু করেছিল। আর থাকতে না পেরেই কোলে তুলে নিয়ে। প্ল্যাটফর্মেই ওকে কোলে নিয়ে ঘোরাফেরা করি। একে-তাকে জিজ্ঞাসা করি। কেউই কিছু বলতে পারেননি। পরে বিপদ বুঝতে পারি। মনে হচ্ছিল, শিশুটিকে ফেলেই পালিয়েছে কেউ। না হলে এতক্ষণ হয়ে গিয়েছে, নিজের সন্তানের খোঁজ নেবে না কেউ, এমন হয় নাকি। তখন সবার পরামর্শে পুলিশের কাছে নিয়ে যাই।”
শিশুটির পরিবারের খোঁজে তত্পর হয়ে ওঠে পুলিশ। রাতেই শিশুটিকে নিয়ে স্টেশন চত্বর ও তার আশেপাশের এলাকাগুলিতে খোঁজ শুরু করা হয়। কিন্তু কোথাও শিশুর মা কিংবা তার পরিবারের লোকজনের খোঁজ মেলে না। শিশু নিখোঁজ হয়েছে, এ ধরনের কোনও অভিযোগ দায়ের হয় নি রাত পর্যন্ত। তাই ধন্দে রয়েছে পুলিশও।
আরও পড়ুন: KMC Election 2021: ‘১০ মিনিট আগেও জানতাম না আমি প্রার্থী হচ্ছি’, প্রচার শুরু করলেন মমতার ভাতৃবধূ