দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কিছুদিন আগেরই ঘটনা। স্বামী তাঁর স্ত্রীকে কতটা ভালবাসেন তা বোঝাতে বিবাহবার্ষিকীতে চাঁদের জমি উপহার দিয়েছিলেন। পৃথিবীর বাইরে এই এক একর জমিতে বসেই ভালবাসার নকশিকাঁথা বুনতে চেয়েছিলেন তাঁরা। এবার চাঁদ ছেড়ে আরও কিছুটা এগিয়ে গেলেন ডায়মন্ড হারবারের এক মহিলা। ছেলে-বৌমার কোল আলো করে এসেছে ফুটফুটে নাতনি। আইনজীবী ঠাকুমা নবজাতিকাকে উপহার দিলেন মঙ্গলে জমি। নাতনির অন্নপ্রাশনে এটাই ঠাকুমার ‘স্মারক’।
ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী শিখা হালদার। রবিবার ছিল তাঁর নাতনির অন্নপ্রাশন। বাড়ি ভর্তি অতিথি। ছেলে দেবায়ন ও বৌমা পিয়ালীর কোলে কোলেই ঘুরছিল ছোট্ট পরী দেবাংশ্রী। অতিথি অভ্যাগতদের সামনেই ঠাকুমা চমকে দেন সকলকে। লালগ্রহে জমি কিনে তার দলিল সকলের সামনে তুলে দেন তিনি। মঙ্গলে জমি, তবে তার জন্য খুব বেশি খরচ করতে হয়নি শিখাদেবীকে। বলা ভাল একেবারে জলের দরে জমি পেয়েছেন ভিনগ্রহে। মঙ্গলে ১ একর জমি কিনতে সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
কিন্তু কম দামে জমি পেলেও মঙ্গলে জমি কেনার সত্যিই কি কোনও সার্থকতা আছে? বিষয় আশয় তো ভোগ করার জন্যই কেনা। এখনই সেখানে যাওয়া যাবে না ঠিকই। তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হালদার পরিবার। তাদের বক্তব্য, বিজ্ঞান প্রযুক্তি যেভাবে এগোচ্ছে তাতে হয়ত অদূর ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহে মানুষ বসবাসও করতে পারবেন। হালদার পরিবার সূত্রে খবর, দেবাংশ্রীর নামে একটি চিপ মঙ্গলে পাঠাবে নাসা।
সোনাদানা, হিরে জহরত তো কম ছিল না এই পৃথিবীতে। তা হলে হঠাৎ মঙ্গলে জমি কেনার কথা কেন মাথায় এল? শিখা হালদার বলেন, “আমার ছেলের বউ আমার কাছে ছেলের থেকে কোনও অংশে কম নয়। আমার নাতনি তো আরও বেশি। আমার নারীশক্তির উপর একটা আলাদা টান। তখনই মনে হয়েছিল আমার নাতনির জন্য আমি এমন কিছু একটা রাখব, যা নজির হবে।” শাশুড়ির এই উপহারে উচ্ছ্বসিত ছেলের বউও। পিয়ালী হালদার বলেন, “উনি আমার মামনি। এমন উপহারে সত্যিই আমি গর্বিত। এমন পরিবার সচরাচর হয় না। কম বেশি সকলেই ছেলে সন্তান চায়। আমার পরিবার বলেছিল সুস্থ একটা সন্তানের জন্ম দাও।”