ভাঙড়: রাজনৈতিক উত্তাপের কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় (Bhangar News) সবসময়ই শিরোনামে থাকে। তবে এখন আরেক কাণ্ড ভাঙড়ে। অভিযোগ, শুক্রবার সকাল থেকে একদল ক্ষ্যাপা মৌমাছির উপদ্রবে অতিষ্ঠ এলাকা। এক একজনকে ৮টা ১০টা করে হুল ফুটিয়ে চলেছে তারা। এই ঘটনার জেরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভাঙড়ের জয়পুর গ্রামে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কম করে ৩০ থেকে ৪০ জন মৌমাছির হামলার শিকার হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পাঁচজন হাসপাতালেও ভর্তি। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে উঠেছে গ্রামে কাশীপুর থানার পুলিশ, ভাঙড় ২ ব্লকের আধিকারিকরাও এলাকায় যান। তাঁরাও মৌমাছির ভনভনাতি অতিষ্ঠ হয়ে ফেরেন। এলাকাবাসীর কথায়, ভাঙড়-২ ব্লকের পাকাপোল থেকে কাঁঠালিয়া যাওয়ার রাস্তার ধারে জয়পুর গ্রামের কাছে একাধিক গাছে মৌমাছির চাক হয়েছে।
এরইমধ্যে শুক্রবার সকালে একটি চাকে বাজপাখি এসে ঠোকর মারে। এলাকাবাসীর দাবি, এরপরই ওই চাকের মৌমাছি ছড়িয়ে ছিটিয়ে ‘গুন্ডাগিরি’ করে বেড়াচ্ছে এলাকায়। পথচলতি মানুষ কিংবা রাস্তার ধারে আড্ডার ঠেকে ঢুকে হুল ফুটিয়ে পালাচ্ছে। এলাকায় একাধিক শিশু মৌমাছির হামলায় জখম। আক্রান্ত এলাকার বয়স্করাও। গালে, মাথায়, ঘাড়ে দলা দলা চুন লাগিয়ে ঘরবন্দি তারা। মৌমাছির ভয়ে ঘরের বাচ্চাদের মশারির ভিতর রাখতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মালেক মোল্লার দাবি, শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০০ জন। স্থানীয়দের দাবি, বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন বাগানে বা রাস্তার ধারের গাছে মৌমাছি চাক তৈরি করে। আর এখন তো ধীরে ধীরে আম গাছে মুকুল আসার সময়ও এগিয়ে আসছে। এছাড়া একাধিক মাঠে সর্ষে চাষও হয়। সেই কারণে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করতে মৌচাক তৈরি করে।
শনিবার সকালেও জয়পুর গ্রামে আতঙ্কের ছায়া। মৌমাছির হাত থেকে বাঁচতে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ডিমের খোল বা অন্যান্য জিনিস ধরিয়ে ধোঁয়া দিয়ে রেখেছেন। বাড়িতে মশারিও টাঙানো। কাঁঠালিয়া, পানাপুকুর, জয়পুর, কচুয়া, শানপুকুর, বেলেদোনা বাজার এলাকার সাধারণ মানুষ মৌমাছি হাত থেকে বাঁচতে ওই রাস্তা এড়িয়ে চলছেন।
জিরানগাছা গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক হিরণ্ময় বসু বলেন, মৌমাছির কামড়ে অসুস্থ হয়ে ৭-৮ জন হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙড়-২ ব্লকের বিডিও কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, বেশ কিছু মানুষ মৌমাছির কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন বলে শুনেছি। ইতিমধ্যে বনদফতর ও প্রাণিসম্পদ দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ভাঙড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতেই যথেষ্ট নাজেহাল পুলিশ প্রশাসন। তার উপর আবার মৌমাছি সামাল দেওয়া। কার্যত দিশাহারা তারা।