ব্যারাকপুর ও উত্তরপাড়া: গরু পাচার মামলায় গত বৃহস্পতিবার সিবিআই গ্রেফতার করেছে বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। রবিবার বেহালার সভা থেকে অনুব্রতের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় অনুব্রতর প্রতি স্নেহ পরশ দেখা গিয়েছে। বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’র গ্রেফতারি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “গ্রেফতার করলেন কেন? কী করেছিল কেষ্ট?” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরই তীব্র আক্রমণ ধেয়ে এসেছে বামশিবির থেকে। সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিমরা চাঁচাছোলা ভাষায় বিঁধেছেন রাজ্যের শাসকদলকে।
উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। অনুব্রতর পাশে মমতার দাঁড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “অনুব্রতর কাছে মধুভাণ্ড রয়েছে। তাই তাঁর পাশে নেতারা থাকবেন। এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু তৃণমূলকে যাঁরা সমর্থন করেছিলেন তাঁরা এখন বুঝতে পারছেন, তাঁদের সমর্থনকে সামনে রেখে তৃণমূল নেতারা কী ভাবে বাংলাকে লুটেপুটে খাচ্ছেন।”
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের শাসকদলকে। হুগলির কোন্নগর থেকে উত্তরপাড়া পর্যন্ত একটি মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। মিছিলের শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, “মমতা অনুব্রতের পাশেই ছিলেন। অনুব্রত ওর ঘরের লোক। অনুব্রত টাকা চুরি করে যদি কালীঘাটে না পাঠায় তাহলে এত ঠাঁটবাট হবে কী করে?” এর পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করেও আক্রমণ করেছেন তিনি। তৃণমূলের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, “তৃণমূল দুর্নীতির আখড়া। অনুব্রত তাঁর নাটবল্টু। নাটবল্টু ঢিলে হলে মমতার তো চিন্তা হবেই।” এর পাশাপাশি তৃণমূলকে আক্রমণ করে সেলিম বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস একটা দুর্নীতির চক্র। এটা কোনও রাজনৈতিক দল নয়। রাজ্যের অর্থনীতিকে চৌপাট করেছে। শিক্ষাকে চৌপাট করেছে। রেশন ব্যবস্থা চৌপাট করেছে। প্রতিটা নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। আর তার জেরে তৃণমূলের নীচ থেকে উপরের সবাই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এই যে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে, এ গুলো হচ্ছে দুর্নীতির টাকা, অবৈধ কারবারের এবং চোরাচালানের টাকায়। সুতরাং মমতা ব্যানার্জির অনুব্রত ছাড়া চলবে না। তৃণমূলের এ রকম চোরচোট্টা ছাড়া চলবে না।”