কলকাতা: প্রেমের টানে সীমানা পাড় করতে গিয়ে গ্রেফতার তিন ইরানি। এদিন সামশেরগঞ্জে ৩ ইরানি যুবককে গ্রেফতার করল BSF। আট বছর আগে দিল্লি আসেন এই ৩ ইরানি যুবক, এমনটাই খবর বিএসএফ সূত্রে। টুরিস্ট ভিসা জাল করেই দিল্লিতে থাকতেন তারা।
জানা গিয়েছে, রাজধানীর বুকে প্রায় এক দশক ধরে ছিলেন এই তিন ইরানি অভিযুক্ত। জাল ভিসা-পাসপোর্ট তৈরি করেই ভারতে আসা। তারপর গা ঢাকা দিয়েই জীবনযাপন। আর খাবার জোগাতে ছোটখাটো কাজে হাত লাগানো। এই ছিল তাদের রোজকার জীবন। তবে চাপ বাড়ে পুলিশি নজরে আসতেই, তাদের বিরুদ্ধে সন্দেহ তৈরি হওয়ায় দিল্লি থেকে পালিয়ে বাংলা চলে আসেন তারা।
কিন্তু বঙ্গে ঢুকে আলাদা আলাদা ভাবেই থাকতে শুরু করেন তিন জন। তৈরি করে ফেলে জাল পরিচয়পত্র। বিভিন্ন ক্যাটারিংয়ের কাজ, গ্যারেজে কাজ করে জীবনযাপন করতে শুরু করেন এই তিন ইরানি। এই ফাঁকেই নিজের দেশের এক যুবতীর প্রেমে পড়ে যান এদের একজন। তারপরেই বাড়ে বিপত্তি। প্রেমের টানে বাড়ি ফিরতে রীতিমতো কান্নাজুড়ে বসেন সেই যুবক। কিন্তু কীভাবেই বা বাড়ি ফিরবে তারা? সেই নিয়ে তৈরি হয় ধন্দ। কারণ, দিল্লি থেকে পালিয়ে বাংলায় ঢোকার সময় পরিচয় লুকাতে জাল পাসপোর্টটাও ছিড়ে ফেলে এই তিন ইরানি যুবক।
এই পরিস্থিতি তাদের জীবনে কার্যত দেবতা হয়ে হাজির হয় এক দালাল। ১০ থেক ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাদেরকে বাংলাদেশ পাঠিয়ে, সেখান থেকে জাল পাসপোর্ট দিয়ে বাড়ি ফেরানোর প্রস্তাব দেয় সে। সেই দালাল আশ্বাস দেয় যে, বাংলাদেশের অন্তবর্তী পরিস্থিতি এতটা টালমাটাল যে তাদের পাসপোর্ট আসল না নকল তা কেউ দেখবেই না। ফলত ভুয়ো আশ্বাসে সওয়ার হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা।
এদিন সেই দালালের কথা মতোই বাংলাদেশে পাড়ি দিতে সামশরগঞ্জ সীমান্তে এসে পৌঁছয় তিন ইরানি। কিন্তু সীমান্তের কাছে পৌঁছতেই তিন যুবকের কথা বার্তা ও দেহের গঠনে সন্দেহ তৈরি হয় সীমান্তরক্ষীদের মনে। এরপরই তিন যুবককে পাকড়াও করে তারা। বিএসএফ সূত্রে খবর, নদীপথ ব্যবহার করে ওই তিন যুবকের বাংলাদেশ পালিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। গরু পাচারের জন্য যে কলা গাছের খোল ব্যবহার করা হয়, সেই ভাবেই জলপথের মধ্যে লুকিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের কথা ছিল এই তিন ইরানি।