ধূপগুড়ি: ধূপগুড়ি (Dhupguri) বিধানসভা উপ-নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে চমক আনল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রার্থী করা হল কলেজ অধ্যাপক নির্মলচন্দ্র রায়কে। গত শুক্রবার ভাওয়াইয়া শিল্পী তথা স্থানীয় শিক্ষক ঈশ্বরচন্দ্র রায়কে এই উপ-নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে সিপিএম। স্বাভাবিকভাবেই এই আসনে শাসকদল কাকে প্রার্থী করবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। রবিবারও এই নিয়ে কলকাতায় বৈঠকে বসেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব (TMC)। সেই বৈঠকের পরই রাতে তৃণমূলের তরফে অধ্যাপক নির্মলচন্দ্র রায়ের নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
যদিও তিনি আদৌ প্রার্থী হবেন, তা কল্পনা করেননি নির্মলবাবু। তাঁর কথায়, “ভাবতেই পারিনি।” এদিন রাতে কলকাতা থেকে ফোন পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন দীর্ঘদিনের তৃণমূলকর্মী ড. নির্মলচন্দ্র রায়। এখন নির্বাচনই যে তাঁর পাখির চোখ তা স্পষ্ট করে দেন অধ্যাপক। এটাই তাঁর প্রথম নির্বাচনী লড়াই। তাই তিনি বলেন, “জিতে ধূপগুড়ি আসনটি দলকে উপহার দেওয়াই তার লক্ষ্য।” রাতেই তিনি দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে প্রচার কর্মসূচি ঠিক করবেন বলেও জানিয়েছেন নির্মলবাবু।
ধূপগুড়ির সাংস্কৃতিক জগতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হলেন অধ্যাপক নির্মলচন্দ্র রায়। শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজবংশী কৃষ্টি-সংস্কৃতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন ধূপগুড়ির মাগুরমারির বাসিন্দা নির্মলবাবু। একাধিক বই লেখার পাশাপাশি একটি পত্রিকারও সম্পাদনা করেন তিনি। এর আগে দার্জিলিং কলেজের অধ্যাপক ছিলেন নির্মলবাবু। বর্তমানে ধূপগুড়ি গার্লস কলেজের অধ্যাপক। একইসঙ্গে সুকান্ত মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।
শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক চর্চার পাশাপাশি রাজনীতিতেও নির্মলবাবুর বিশেষ দখল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন ছাত্র-রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। তারপর ধীরে-ধীরে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। প্রথমজীবনে কংগ্রেস কর্মী থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী। তাই ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে নির্মলবাবুর নাম উঠে এসেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত টিকিট দেওয়া হয়েছিল মিতালী রায়কে। যা নিয়ে নির্মলবাবু কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। অবশেষে এবার তাঁকেই প্রার্থী করল দল। নির্মলবাবুকে উপ-নির্বাচনের প্রার্থী করা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ কুমার সিং বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে আমরা সেটা মেনে নেব। ইতিমধ্যে আমরা নাম ছাড়া দেওয়াল লিখন শুরু করে প্রচারে নেমেছি। এবার প্রার্থী নাম ঘোষণা হয়েছে। দলের নির্দেশ মতো এবার তাঁকে নিয়ে জোরকদমে প্রচার করব।
জানা গিয়েছে, সোমবারই দলীয় প্রতীক নিতে কলকতায় আসবেন নির্মলচন্দ্র রায়। তারপর কলকাতা থেকে ফিরেই তিনি জোরকদমে প্রচার শুরু করবেন। অন্যদিকে, এদিনই সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জেলায় এসে নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের মৃত্যুতেই পুনরায় ধূপগুড়ি কেন্দ্রে নির্বাচন হতে চলেছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন এবং ফলপ্রকাশ ৮ সেপ্টেম্বর।