TMC MLA: ‘১০-৪০ হাজার টাকা কাটমানি নিয়ে আবাস তালিকায় নাম নথিভুক্ত করেছেন’, দলীয় কর্মীদের তোপ তৃণমূল বিধায়কের

আবাস যোজনায় কাটমানি প্রসঙ্গে সরাসরি দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মগরাহাট পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা।

TMC MLA: '১০-৪০ হাজার টাকা কাটমানি নিয়ে আবাস তালিকায় নাম নথিভুক্ত করেছেন', দলীয় কর্মীদের তোপ তৃণমূল বিধায়কের
তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 12, 2023 | 7:57 PM

মগরাহাট: ফের প্রকাশ্যে শাসকদলের কোন্দল! এবার আবাস যোজনায় কাটমানি প্রসঙ্গে সরাসরি দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মগরাহাট পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। একেবারে প্রকাশ্য জনসভা থেকে দলীয় কর্মীরা আবাস যোজনায় কাটমানি নিয়েছেন বলে তোপ দাগলেন তিনি। বিধায়কের সেই বক্তব্য বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যা পঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন করে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়াল।

জানা গিয়েছে, উস্তির শেরপুর পঞ্চায়েত এলাকায় দিদির দূত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন মগরাহাট পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। সেখানে এক জনসভা করেন তিনি। সেই সভাতেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবাস যোজনায় দুর্নীতির কথা কার্যত স্বীকার করে নেন তিনি। দলের সদস্যরাই ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা কাটমানি নিয়ে আবাস তালিকায় নাম নথিভুক্ত করেছেন বলে তোপ দাগেন বিধায়কের। যা নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

ঠিক কী বলেছেন বিধায়ক? উস্তির শেরপুর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রকাশ্য জনসভা থেকে তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা বলেন, “আবাস যোজনায় দলের পঞ্চায়েত সদস্যরাই কাটমানি নিয়ে প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করে আত্মীয়-‌স্বজনদের নাম তুলেছে। আর তালিকায় নাম তোলার জন্য ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে।” নাম না করে পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যদের তোপ দেগে তিনি বলেন, যাকে সংসারের দায়িত্ব দিয়েছি সে ঠিকমতো কাজ করে না। ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা কাটমানি নিয়ে আবাস তালিকায় নাম নথিভুক্ত করেছে। আত্মীয়-‌স্বজনদের নাম দিয়েছে। প্রকৃত গরীবরা বঞ্চিত হয়েছে। একইসঙ্গে এই ঘটনায় রীতিমতো আক্ষেপ প্রকাশ করে বিধায়ক বলেন, “দলের সদস্যরা তবে সকলে সমান হয় না।” তিনি এই ঘটনায় লজ্জিত এবং মানুষের জন্য কাজ করেন দাবি জানিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। তাঁর কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি যাবে, তাঁদের কাছে সমস্যার কথা জানানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি। সমস্যা শোনা মাত্রই তিনি সেই সব সমস্যার সমাধান করবেন বলেও দাবি জানিয়েছেন।

তবে দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ তোলার ব্যাপারে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও বিধায়কের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন স্থানীয় শেরপুর পঞ্চায়েতের প্রধান জামাল সর্দার। তিনি পাল্টা বিধায়ককে দুর্নীতিগ্রস্থ ও তাঁদের থেকে কাটমানি নেন বলে তোপ দেগেছেন। যদিও এপ্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, “আমি কারও নাম বলিনি। এলাকার মানুষ যা বলছিল, সেটাই জানিয়েছি।” দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি দেখবেন বলেও তাঁর দাবি।

অন্যদিকে, বিধায়কের মন্তব্য, আবাস যোজনায় দলীয় সদস্যের কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন মগরাহাট-১ ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি ইমরান হাসান। তবে বিধায়কের বুঝে মন্তব্য করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা ও পঞ্চায়েত প্রধানের তোপ, পাল্টা তোপের ঘটনায় কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। নিজেদের দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে এই সমস্ত কথা বলে তৃণমূল নেতারা নিজেদের ভাল ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চাইছেন বলে জানিয়েছেন সিপিএম নেতা মিন্টু মোকামি। আবার বিজেপি নেতা পীযূষ ভাণ্ডারির কটাক্ষ, “ছোট চোর এবং বড় চোরের লড়াই হচ্ছে।”