উত্তর দিনাজপুর: করোনার (COVID-19) কারণে এ বছর মাধ্যমিক (Madhyamik) ও উচ্চমাধ্যমিক (HS) পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। বদলে এবার এই বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যথাক্রমে নবম ও একাদশ শ্রেণির ফলাফলের একটা বিশেষ তাৎপর্য থাকছে। গত ১৮ জুন মূল্যায়ন পদ্ধতি ঘোষণার পরই স্কুলে-স্কুলে বিভিন্ন সমস্যার খবর পাওয়া গিয়েছে।
কোথাও নবমের নম্বর বাড়ানোর দাবি নিয়ে প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করা হচ্ছে। কোথাও আবার একাদশের নম্বরে সন্তুষ্ট নয় বলে স্কুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় মূল্যায়নের সুযোগ থেকেই বঞ্চিত হয়েছেন করণদিঘির (Karandighi) ২৯ জন পরীক্ষার্থী। এই অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করলেন অভিভাবকরা।
অভিযোগ, শুধু নথিভুক্তিকরণ না হওয়ার জন্য করণদিঘির মাদারগাছি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৯ জন পড়ুয়ার একটি শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হতে বসেছে। শুধু তাই নয়, এই ২৯ জনের মধ্যে আছেন ক্লাসের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানাধিকারী ছাত্রীরাও। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কথাই অভিযোগ আকারে সামনে আসছে।
কোভিডের কারণে পরীক্ষার বদলে মূল্যায়নের নিরিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। অথচ ২৯ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফর্ম ফিলাপ করেও তাঁদের তালিকা পর্ষদে না পাঠানোর অভিযোগ উঠল সংশ্লিষ্ট স্কুলের বিরুদ্ধে। সেই তালিকায় রয়েছেন স্কুলের নবম থেকে দশমে উত্তীর্ণ তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চম স্থানাধিকারীও।
এই অবস্থায় এতজন পড়ুয়ার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। যার প্রেক্ষিতে ওই পড়ুয়াদের নাম পর্ষদে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক। তারপরেও মূল্যায়নের নিরিখে এবারের পরীক্ষার্থী হিসেবে তাঁরা বিবেচিত হবেন কিনা তার কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে শুক্রবার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে অভিভাবকদের বিক্ষোভে সাময়িক বিশৃঙ্খলাও তৈরি হয়।
অভিভাবক ও পড়ুয়াদের দাবি, গত বছর থেকে টানা লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় তাঁরা স্কুলের তরফে কোনও বিষয় নিয়েই অবগত ছিলেন না। এমনকি ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে ফর্ম-ফিলআপের জন্যও স্কুল থেকে কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকি রাজ্য সরকারের নির্দেশে স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থাকলেও তাতেও এই সংক্রান্ত কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে দাাবি করেছেন তাঁরা।
এদিকে স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য ও অভিভাবক পুর্নচন্দ্র সিনহার অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিচালন সমিতির কোনও বৈঠকে ডাকেন না। সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষই দায়ী বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে স্কুলের তরফে জানা গেছে, স্কুলের মোট ১৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন ছাত্র ও ৭৪ জন ছাত্রী তো ফর্ম-ফিলাপ করেছেন। তাঁরা কীভাবে খবর পেলেন? গোটা ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: Mucormycosis: বঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী মৃত্যুগ্রাফ! ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণে ফের মৃত ২
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার ঘোষ পাল্টা একগুচ্ছ প্রমাণপত্র নিয়ে সব দায় অভিভাবকদের উপরই চাপিয়ে দেন। যদিও স্কুলের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা কিভাবে বঞ্চিত হল সেই বিষয়ে তার কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত ওই ২৯ জনের ব্যাপারে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে আবেদন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।