উত্তর দিনাজপুর: ইসলামপুর পৌরসভা নির্বাচনে অশান্তির আশঙ্কা করছেন খোদ বিধায়ক (TMC MLA) আব্দুল করিম চৌধুরী। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জাকির হুসেন ও তাঁর সঙ্গী সাথীরা অশান্তি করবেন বলে তাঁর অভিযোগ। ইসলামপুর বাস টার্মিনাস সংলগ্ন এলাকায় নিজের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে একথা বলেন স্বয়ং তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর আশঙ্কা, বিরোধীরা নয়, বরং দলের নেতারাই সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে পারেন।
সাংবাদিক বৈঠকে বিধায়ক অভিযোগ করেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী থাকে। তাদের হাতে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে, শেষ নির্বাচনে (পড়ুন বিধানসভা নির্বাচন) সন্ত্রাস ছড়িয়েছিল। এ বার পুরভোটেও একইভাবে সন্ত্রাস ছড়াতে পারে বলেই আশঙ্কা করেছেন খোদ বিধায়ক। তাই তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে বিধায়কের আর্জি, এবারের নির্বাচনে দল যেন জাকির হোসেনকে ব্যবহার না করা হয়।
জাকির হুসেনকে পৌরসভা প্রচারে না নিয়ে আসার জন্য জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের কাছেও আবেদন করেছেন বিধায়ক। অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বক্তব্য, “বিধায়কের এই বক্তব্য রাজনৈতিক নয়। আমি দলের জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, বিগত নির্বাচনগুলির মতো এবারও শুধু ইসলামপুরেই নয়, ডালখোলা ও কালিয়াগঞ্জ পুর নির্বাচনেও কোনওরকম সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটবে না।”
ঘটনায়, তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে আসতে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের দাবি, বহিরাগতদের নিয়ে এসে ইসলামপুরে পুর নির্বাচনে সন্ত্রাস ছড়াতে পারে তৃণমূল। এ বার তৃণমূলের বিধায়কও একই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন। ফলে ভোটের আগেই সন্ত্রাসের আশঙ্কা বাড়ছে। নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয় হওয়া উচিত। না হলে শান্তিপূর্ণ ভোট সম্ভব নয় বলেই দাবি করেছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, এর আগে পৃথক ইসলামপুরের দাবি তুলেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। তাতে কার্যত ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে, পুরভোট আবহে, প্রার্থী নিয়েও বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। খোদ বিধায়ক জানিয়েছিলেন তিনি প্রার্থী তালিকায় খুশি নন। এমনকী, তাঁর অনুগামীরা বা ‘ঘনিষ্ঠরা’ কেউ নির্দল হয়ে লড়াই করলে তাঁকে সমর্থনও করবেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, ইসলামপুর পুরসভায় ১নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন কৃষ্ণা ঘোষ দত্ত, তার বদলে প্রার্থী করা হয়েছে সঞ্জয় দত্তকে। ১৫নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন দ্বিজেন পোদ্দার, তার জায়গায় প্রার্থী করা হয় অর্পিতা পোদ্দার দত্তকে। ফলে, স্পষ্ট, ইসলামপুরের তৃণমূল কার্যত আড়াআড়িভাবে দুটি শিবিরে বিভক্ত। বিধায়কের এ হেন মন্তব্যে ফের নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh on Sandhya Mukherjee’s Death: ‘দুর্ভাগ্যের বিদায়, শেষজীবনেও রাজনীতির শিকার হলেন সন্ধ্যা’