রায়গঞ্জ: গত ১১ই নভেম্বর শুক্রবার রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লীতে নিজের ঘরেই গলাকাটা রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় গৃহবধু সুপ্রিয়া দত্তের (Supria Murder Case)। তদন্তে নেমে গত ১৭ নভেম্বর আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটায় একটি হোটেল থেকে মূল অভিযুক্তকে ধরে পুলিশ। ওই হোটেলে আত্মগোপন করে ছিল অভিযুক্ত প্রবাল সরকার। সূত্রের খবর, সুপ্রিয়ার সঙ্গে প্রবালের দীর্ঘদিনের প্রেমের (Love) সম্পর্ক ছিল। বিগত কয়েকমাসে তা আরও গভীর হয়। এদিকে প্রবালের প্রেমে মগ্ন সুপ্রিয়া প্রবালকে বিয়ের প্রস্তাবও দেয় বলে খবর। কিন্তু, উভয়েরই সংসারের কথা ভেবে প্রবাল তাতে রাজি হননি। যা নিয়ে দুজনের মধ্যে চলতে থাকে টানাপোড়েন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিনও বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে প্রবাল সুপ্রিয়ার বাড়িতে আসেন। তখন সবে মাত্র স্নান করে বেরিয়েছেন সুপ্রিয়া। ভেজা চুলে গামছাও বাঁধা ছিল। ওই অবস্থাতেই উদ্ধার হয়েছিল তাঁর দেহ। দেখা হওয়ার পর উভয়ের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ কথোপকথন হয়। কিন্তু, তারপরে এমন কী ঘটল যাতে নিজের প্রেমিকের কাছেই খুন হতে হল সুপ্রিয়া দেবীকে? তদন্তকারীদের অনুমান, প্রথমে দুজনের মধ্যে দীর্ঘ সময় নানা বিষয়ে কথা হয়। ফের ওইদিন বিয়ে করে সংসার করার প্রস্তাব রাখেন সুপ্রিয়া। কিন্তু, নিজের স্ত্রী ও সন্তানের কথা ভেবে তাতে রাজি না হয়ে সুপ্রিয়াকে প্রথমে বোঝানোর চেষ্টা করেন প্রবাল। বিছানাতে দীর্ঘ সময় কার্যত ‘রিল্যাক্স মুডে’ শুয়েও ছিলেন দুজনে। প্রেমালাপও হয় দীর্ঘক্ষণ। ঘটনার পুর্নর্নিমান ও অভিযুক্তকে জেরা করে তদন্তকরারীদের অনুমান, ঠিক যে মুহূর্তে দুজন ঘনিষ্ঠ হতে যাচ্ছিলেন তখনই সুপ্রিয়াকে খুন করেন প্রবাল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুপ্রিয়া দেবীর গলায় মারা হয় একের পর এক কোপ।
ইতিমধ্যেই খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। বেশ কিছু জামা-কাপড় ও গামছাও উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের অনুমান, আগেই থেকেই সবটা ছকে রেখেছিলেন প্রবাল। সে কারণেই সঙ্গে এনেছিলেন ধারাল অস্ত্র। শেষে ঠাণ্ডা মাথাতেই খুন করেন সুপ্রিয়াকে। তবে তদন্তের অগ্রগতির জন্য এখনও প্রবালকে জেরা করতে চাইছেন পুলিশ কর্তারা। ধরা পড়ার পর প্রবাল সরকারকে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই পর্বে জেরা করেই ধৃতের থেকে খুন সংক্রান্ত প্রচুর তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। রবিবার সেই মেয়াদ শেষ হতেই আবারও ৪ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাঁকে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হয়। রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।