রায়গঞ্জ : খাতায়-কলমে তিনি বিজেপি বিধায়ক। বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কোনও তথ্য় নেই। কয়েকদিন আগে তাঁর আহ্বানে তৃণমূলের কর্মিসভা হয়েছিল রায়গঞ্জে। সেইসময় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন, উনি রায়গঞ্জের বিধায়ক। আজ আবার তৃণমূলের ব়্যালিতে দেখা গেল তাঁকে। আর ওই ব়্যালির শেষে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani) বললেন, “এটা মা-মাটি-মানুষের দল। এখানে আমরা একসঙ্গে কাজ করি।” ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে আজ রায়গঞ্জে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের নেতৃত্বে আরও একটি মিছিল হয়। দুটি মিছিল ঘিরে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হল উত্তর দিনাজপুরে? যদি কৃষ্ণ কল্যাণী এবং কানাইয়ালাল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।
তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি পর্বে রায়গঞ্জে আজ তৃণমূলের দুটি মিছিল হয়। পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান ও রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর নেতৃত্বে বাইক মিছিল ও জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের নেতৃত্বে পদযাত্রা।
বুধবার বিকেলে প্রথমে রায়গঞ্জের স্টেডিয়াম ময়দান থেকে বাইক মিছিল শুরু হয়ে শহর পরিক্রমা করে বোগ্রামে গিয়ে শেষ হয়। সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। রায়গঞ্জ থানার আইসি সৌরভ সেন ও থানার পুলিশকর্মীদের উপস্থিতিতে সেই মিছিল হয়। ওই মিছিলের কিছুক্ষণ বাদে রায়গঞ্জের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের বাস ডিপোর সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয় তৃণমূলের। সেই মিছিলের নেতৃত্ব দেন কানাইয়ালাল আগরওয়াল।
কৃষ্ণ কল্যাণীর নেতৃত্বে বাইক মিছিলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মাথায় হেলমেট ছিল না। পুলিশের উপস্থিতিতে কী করে হেলমেট না পরে বাইক মিছিল হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি নিমাই কবিরাজ বলেন, পুলিশের সামনে কী করে হেলমেট ছাড়া বাইক মিছিল হয়? এই নিয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসে পড়েছে।
হেলমেট না পরে বাইক মিছিল করা ঠিক হয়নি বলে মেনে নিলেন কানাইয়ালাল আগরওয়াল। তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে চাননি তিনি। আবার বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, তাঁর বাইক মিছিল শহর থেকে গ্রামে। আর পদযাত্রা শুধুমাত্র শহরেই হয়েছে। তাই এটা আলাদা নয়। এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “বিরোধীদের বলব, নিজের চরকায় তেল দিন। এটা মা-মাটি-মানুষের দল। এখানে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি।”
গতবছরের অক্টোবরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে তাঁকে ঘাসফুলে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। তবে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, রায়গঞ্জের বিধায়কের অন্য দলে যাওয়ার কোনও তথ্য বিধানসভার কাছে নেই।
কোন দলে রয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক? বিজেপির জেলা সহ সভাপতি নিমাই কবিরাজ বলছেন, “নিজের পরিচয় নিজে দিতে পারেন না কৃষ্ণ কল্যাণী। কোথায় আছেন, তা নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেন না। এটা তাঁর দ্বিচারিতা। আইনের মাধ্যমেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”