উত্তর দিনাজপুর: ছাগল চুরির ঘটনায় গ্রাম্য সালিশি সভায় ছাগলের মালিক এক হত দরিদ্র মহিলাকেই একঘরে করে আর্থিক জরিমানা করার নিদান গ্রামের মাতব্বরদের! এমনই অভিযোগের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল রায়গঞ্জের মধুপুর সংলগ্ন বারোদুয়ারি এলাকায়। জানা গিয়েছে, গত বুধবার বারোদুয়ারির বাসিন্দা ফুলি রায়ের একটি ছাগল হারিয়ে যায়। অনেক খুঁজেও সেটি না পেয়ে রায়গঞ্জ থানার দ্বারস্থ হয় ফুলি রায়। এরপর শনিবার বারোদুয়ারি হাটে এক মাংস বিক্রেতার কাছে তাঁর ছাগলটি দেখতে পান। ছাগল নিতে গেলে বিবাদ বাধে উভয় পক্ষের। এরপর খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ পৌঁছে ওই মাংস বিক্রেতাকে আটক করার পাশাপাশি কয়েকটি ছাগল নিয়ে যায়। আর এতেই বাঁধে গোল৷
এরপর ওই মাংস বিক্রেতা ছাড়া পেলে এলাকার শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য গ্রামে সালিশি সভা ডাকা হয়। রবিবার বিকালে সেই মোতাবেক বারোদুয়ারি হাটখোলা চত্বরে এই সালিশি সভা হয়। অভিযোগ, সেখানে উভয় পক্ষকে ডাকা হলে মাংস বিক্রেতার ব্যবসায়ী ক্ষতি বাবদ একতরফা ফুলি রায়কে প্রায় ৯ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিদান দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে তাকে বাড়ি থেকে না বেরানোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার পর থেকে ফুলি রায় রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানান। এদিকে ফুলি রায়ের সঙ্গে ঘটা এই ঘটনায় এলাকার অন্যান্য ছাগল পালক বাসিন্দারাও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান। এলাকার নেশাগ্রস্তদের বাড়বাড়ন্তের কারণেই এলাকায় ছাগল চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে বলে তাঁদের দাবি।
যদিও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্বামীর দাবি, মীমাংসা করার জন্য সালিশি সভা ডাকা হলেও ফুলি রায়কে কোনও জরিমানা করা হয়নি। কোনও কঠোর নিদানও দেওয়া হয়নি বলে দাবি তাঁর। তাঁর দাবি, সালিশি সভায় ফুলি রায়কে ডাকা হলেও তিনি একটু সময় থেকেই চলে যান। পুলিশকে জানিয়েই সেই সালিশি সভা ডাকা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।