রায়গঞ্জ: পঞ্চায়েতের মুখে (Panchayat Election 2023) নতুন বিতর্কে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)। তৃণমূলের ভোট প্রচারে নেমে আজ রায়গঞ্জের মহারাজপুর গ্রামে মতুয়াদের মন্দিরে যান বিধায়ক। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের প্রার্থীরাও। আর সেখানেই বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর একটি ছবি ধরা পড়ে। সেখানে দেখা যাচ্ছে মন্দির চত্বরে মতুয়া সম্প্রদায়ের এক মানুষ তাঁর পা ধুইয়ে গামছা দিয়ে মুছে দিচ্ছেন। আর এই পা ধুইয়ে দেওয়ার দৃশ্যটিকেই এবার ভোটের মুখে হাতিয়ার করতে শুরু করেছে বিরোধীরা, বিশেষ করে বিজেপি শিবির। তাদের বক্তব্য, মতুয়াদের অসম্মান করেছেন বিধায়ক।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের বক্তব্য, মতুয়া সমাজের রীতি হল তাঁদের গুরুদেবদের পা ধুইয়ে দেওয়া এবং সম্মান জানানো। আর এখানেই বিজেপি নেতার প্রশ্ন, ‘ওই ভদ্রলোক (কৃষ্ণ কল্যাণী) কি মতুয়া সম্প্রদায়ের কেউ যে তাঁর পা ধুইয়ে দিতে হবে? প্রকারান্তরে তিনি মতুয়াদের কাছ থেকে পা ধুইয়ে নিয়ে মতুয়া সমাজকে অপমানিত করলেন।’ বিজেপির দাবি, তাদের দলই মতুয়াদের সম্মান দেয়। আর তৃণমূল মতুয়াদের ব্যবহার করে ও অপমান করার চেষ্টা করে।
এদিকে এই ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ার পর কৃষ্ণ কল্যাণীর প্রতিক্রিয়াও জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁর দাবি, তিনি কোনওভাবেই মতুয়াদের অপমান করেননি। বিধায়কের ব্যাখ্যা, মতুয়ারা তাঁদের সংস্কৃতি অনুযায়ী বিধায়ককে স্বাগত জানিয়েছেন। কৃষ্ণ কল্যাণী জানাচ্ছেন, তিনি সেই সময়েও হাত জোড় করেই বসেছিলেন। বিজেপিকে পাল্টা ঠুকে তিনি বলেন, ‘বিজেপি মতুয়াদের সংস্কৃতি বোঝে না। গুরুদেব কেউ কাউকে হৃদয় থেকে বানান।’ বিরোধীরা যাই বলুক, কৃষ্ণ কল্যাণী বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, এতে কোনওভাবেই মতুয়াদের অসম্মানিত করেননি তিনি। বরং গোটা বিষয়টিই মতুয়াদের সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবেই ব্যাখ্যা তাঁর।
উল্লেখ্য, এই কৃষ্ণ কল্যাণী ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন। খাতায় কলমে বিধানসভার অন্দরে তিনি এখনও বিজেপি বিধায়ক। বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন তিনি, যেখানে সাধারণত বিরোধী শিবির থেকেই কাউকে বসানো হয়ে থাকে। তবে বিধানসভার বাইরে তিনি পুরোদস্তুর তৃণমূলী। এই নিয়েই বিভিন্ন সময়ে বিরোধীদের কটাক্ষ শুনতে হয়েছে কৃষ্ণ কল্যাণীকে।