উত্তর দিনাজপুর: পুরসভা থেকে বন দফতর কিংবা পুলিশ কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। বনাঞ্চল থেকে রাতারাতি কেটে নেওয়া হচ্ছে একের পর এক গাছ। হারিয়ে যাচ্ছে সরকারি অধিগৃহিত জমি থেকে বনভূমি। রাতের অন্ধকারে কেটে সাফ হচ্ছে বড় বড় দামি গাছ। উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) জেলার রায়গঞ্জের (Raiganj) কুলিক নদীর ধারের আস্ত বনভূমি থেকে লোকচক্ষুর আড়ালে এভাবে চলছে এই ‘অরণ্য নিধন’ যজ্ঞ।
কিন্তু কারা কাটছে এই গাছ? কেনই বা কাটছে? এর পেছনে কোনও বড় চক্র থাকতে পারে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। খবর থাকলেও উদাসীনতার অভিযোগ প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
রায়গঞ্জ শহরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া কুলিকের বাঁধের ধারেই রয়েছে একটি বনভূমি। আগে ওই বন একটি আর্থিক লগ্নি সংস্থার ছিল। বর্তমানে সেটি সরকারি জমি বলেই দাবি স্থানীয়দের। সেগুন থেকে আকাশমণি, মেহগনি, কদম-সহ বিভিন্ন ধরনের বহু গাছ রয়েছে এই অরণ্যে। বন দফতর বা স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি না থাকার সুযোগে দিনে দিনে কেটে ফেলা হচ্ছে সেই গাছগুলি। কিন্তু কারা কাটছে এইসব গাছ?
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এলাকারই একদল এই চক্রে জড়িত আছেন। আবার গ্রামাঞ্চল থেকে এসে রাতারাতি গাছ কেটে নদী দিয়ে লগ ভাসিয়ে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে। মুনাফার জন্যেই অসাধু কারবারিরা দিনের পর দিন এভাবে বনাঞ্চল থেকে গাছ কেটে উধাও করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীরাও চাইছেন এই বন বাঁচাতে দ্রুত হস্তক্ষেপ করুক প্রশাসন।
আর এভাবে গাছ কেটে ফেলায় বন হারিয়ে যাচ্ছে। এবং বন্যপ্রাণীরা বাসস্থান হারিয়ে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে বলেই দাবি।
এই ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুর কাউন্সিলরও। তাঁর বিস্ফোরক দাবি, জুয়ায় হেরে বা নেশার টাকা জোগাড় করতে কেউ কেউ একাজ করছে। তাঁদের পক্ষ থেকে বন দফতরকে একাধিকবার জানানো হয়েছে এবং আগামীতে প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর। কাউন্সিলরের কথায়, “আমরাও জানি। আমার কাছেও অভিযোগ এসেছে। সবাই মিলে পাহারা দিচ্ছি। কিন্তু তার মধ্যে নদী পথে ভিনগ্রামের কেউ কেউ এসে গাছ চুরি করছে।” তিনি যোগ করেন, বন্যা হয় এই অঞ্চলে। এভাবে বন জঙ্গল সাফ হয়ে গেলে পরে ভয়াবহ অসুবিধায় পড়তে হবে। তবে বলতে পারছেন না কারা রয়েছে এর নেপথ্যে।
যদিও বন দফতরের কর্তাদের দাবি, তাঁরা উচ্চ পদস্থ কর্তাদের জানিয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ করবেন। কিন্তু এভাবে দিনের পর দিনে বনভূমি থেকে কারা কিভাবে কেটে নিয়ে যাচ্ছে এই গাছ? কেন দেখেও দেখছে না প্রশাসন? এ নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: Eve Teasing: ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ কলকাতা মেডিক্যালের সামনে! চলল ‘গুলি’, নামানো হল র্যাফ