করণদিঘি : শাসকের কোন্দলের প্রভাব এবার স্কুলেও (School)। তৃণমূলের (Trinamool Congress) মাদার সংগঠন ও যুব সংগঠনের দুই নেতার বিবাদে সমস্যায় করণদিঘির আলতাপুর হাইস্কুল। অভিযোগ, মিড ডে মিল (Mid Day Meal) সহ স্কুল পরিচালন কমিটির হিসাবের ভাগ কে কতটা পাবে তা নিয়েই এই বিবাদের সৃষ্টি। বচসা, হাতাহাতিতে উত্তপ্ত স্কুল চত্বর। প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগ পৌঁছেছে থানা থেকে জেলাশাসক পর্যন্ত। আর এইসব গোলমালে আলতাপুর স্কুলের উন্নয়ন, পড়ুয়াদের মিড ডে মিল সব গোল্লায় যেতে বসেছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলের স্থানীয় নেতাদের। এদিকে স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যরা, একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন প্রকাশ্যেই। তাঁদের এক পক্ষের দাবি, হিসাব চাইতেই পরিচালন সমিতির সদস্যকে মারধর করেছে কিছুজন। প্রধান শিক্ষক অবশ্য দাবি করেছেন, স্কুলের সবকিছু চলছে নিয়ম মেনেই। তবে গোলমালের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। সেই গোলমালে স্কুল চালাতে সমস্যার কথাও গোপন করেননি। পাশাপাশি তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হতে পারত। যেহেতু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পরিচালন সমিতির সদস্য লিখিত অভিযোগ করেছেন, তাই তিনিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সবটা লিখিত আকারে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের আলতাপুর হাইস্কুলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য বিভিন্ন মহলে।
করণদিঘির আলতাপুর হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি ও অন্য দুই সদস্যর মধ্যে মারামারির ঘটনায় চলতি মাসের ২ তারিখ করণদিঘি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পরিচালন সমিতির সদস্য আবু তাহিরের স্ত্রী। অভিযোগ, স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি মহঃ হানিফ তাঁর স্বামী আবু তাহিরকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। ওই ঘটনায় আহত আবু তাহির রায়গঞ্জ মেডিকেলে ভর্তি হন। এরপরে চলতি মাসের ৫ তারিখ আবু তাহির ও স্কুল পরিচালন সমিতির আরও ২ সদস্য জেলাশাসক-সহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, স্কুলে মিড-ডে-মিল ঠিক ভাবে খাওয়ানো হয় না। পাশাপাশি স্কুলের পরিচালন সমিতির কোনও বৈঠক হয় না কোনও দিন। এই সমস্ত বেনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান তাঁরা। শুধু তাই নয়, পড়ুয়া ভর্তি বা মিড ডে মিল সব ক্ষেত্রেই অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করে তাঁদের অন্ধকারে রেখেই পরিচালন সমিতির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের দুজনের যোগসাজশেই স্কুলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষত মিড-ডে-মিলে অবৈধ কারবার চলছে বলে অভিযোগ।
যদিও মিড-ডে-মিল নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্তে সায় না দেওয়াতেই তাঁরা এই চক্রান্ত করছেন বলে পাল্টা দাবি করেন অভিযুক্ত পরিচালন সমিতির সভাপতি মহঃ হানিফ। তাঁর দাবি, মিড-ডে-মিলের টাকা হাতানোর ছক ছিল অভিযোগকারীদের। তবে সব মিলিয়ে পরিচালন সমিতির অন্দরে এই বচসা বা তীব্র দ্বন্দে স্কুলের একটা বড় ক্ষতি হতে বসেছে এবং তার প্রভাব যে ইতিমধ্যেই পড়ুয়াদের উপর পড়ছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের মাদার এবং যুব সংগঠনের দুই নেতা মিড-ডে-মিলের টাকার বখরা নিয়ে গোলামাল পাকানোয় আলতাপুর হাই স্কুলের উন্নয়ন, পড়াশোনা ও মিড ডে মিল গোল্লায় যাচ্ছে। প্রশাসনকে সক্রিয় হয়ে সবটা সামাল দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। যদি প্রশাসন সঠিক ভূমিকা গ্রহণ না করে তবে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।