জলপাইগুড়ি: দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের কর্মসূচি। অভিযোগ, সেই কর্মসূচিতে ভিআইপি গেট দিয়ে ঢোকার অনুমতি না মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল (TMC) নেতা। শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি ছিল চালসায়। সেখানেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠল। ভিআইপি চেয়ারে বসার তালিকায় নাম না থাকায় তুমুল বিশৃঙ্খলা বাধে সভাস্থলে। রীতিমতো তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি এবং কৃষক নেতা তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে বিবাদ থামাতে আসরে নামতে হয় পুলিশকেও। এগিয়ে যান জলপাইগুড়ির ডিএসপি ক্রাইম বিক্রমজিত লামাও।
মেটেলির প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তৃণমূলের সোনা সরকার। অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভামঞ্চে আসার আগে ভিআইপি গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে যান তিনি। সেইসময় কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁকে গেটে আটকে দেন। ভিআইপিদের তালিকায় তাঁর নাম না থাকায় ওই গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন সোনা সরকার। তুমুল চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয় সভাস্থলে। প্রকাশ্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে ক্ষোভ উগরে দেন।
এদিকে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝতে এগিয়ে আসেন দলের নেতারা। রাজগঞ্জের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়, জেলা কিষাণ খেত মজদুরের সভাপতি দুলাল দেবনাথ-সহ অনেকেই বাইরে বেরিয়ে আসেন। এরইমধ্যে ঘটে আরেক ঘটনা। সোনা সরকারের স্ত্রী সীমা সরকার আবার জেলা পরিষদের সদস্য। তাই তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল ভিআইপি চেয়ার। সেই চেয়ারে আগেই গিয়ে বসেছিলেন তিনি।
তবে স্বামীকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ কানে পৌঁছতেই চেয়ার ছেড়ে বেরিয়ে আসেন স্ত্রীও। তিনিও ক্ষোভ উগরে দেন। পরে জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। ক্ষিপ্ত সোনা সরকারকে ভিতরেও নিয়ে যান। সেখানেও বর্তমান মেটেলি ব্লক সভাপতি জোসেফ মুণ্ডার সঙ্গে সোনার একপ্রস্থ কথা কাটাকাটি হয় বলে অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে পরে জোসেফ মুণ্ডা বলেন, “কেন তিনি এমন করলেন সেটা জানি না। ওনার সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি কোনও কথা বলেননি। এমনকী বেশ কিছুদিন ধরে মিটিংয়েও আসেন না। অনেক দিন পদে ছিলেন এখন তিনি পদে নেই। তাই তিনি নিজেকে সামলাতে পারছেন না, পদ না থাকায়। তবে পরের তিনি সভায় বসেছিলেন মিটিংও শুনেছেন।” অন্যদিকে সোনা সরকারের বক্তব্য, দলের জন্মলগ্ন থেকে তাঁরা পার্টিতে, অথচ তাঁদের সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।