জলপাইগুড়ি: বিষের জ্বালায় ছটফট করছিল একটি সাপ। এমন দৃশ্য আগে দেখেনি কেউ। সকলে কিছুটা অবাকই হয়ে গিয়েছিল। এরপর খবর দেওয়া হয় স্থানীয় এক পরিবেশ কর্মীকে। তিনি এসে সটান সাপের মুখে মুখ লাগিয়ে শুরু করলেন মাউথ টু মাউথ রেস্পিরেশন। তাতেই নতুন জীবন পেল সাপটি। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি হাইস্কুল সংলগ্ন এক বাড়িতে। চিকিৎসার প্রায় ৬ ঘণ্টা পর অবশেষে নড়েচড়ে বসে সাপটি। পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরীর এমন কাণ্ডে হতবাক এলাকার লোকজনও। স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন দুপুরে অশোকনগর এলাকার একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে একটি র্যাট স্নেক। সে একটি ব্যাঙ ধরে খপাৎ করে তা গিলেও নেয়। এরপরই কিলবিল করতে করতে আরও খাবারে খোঁজে ঢুকে পড়ে ঘরের ভিতর। বেশ লম্বা সাপটিকে দেখে কার্যত ঘাবড়ে যান বাড়ির লোকেরা।
যে মেয়ে বউরা বাড়িতে ছিলেন, তারাই কিছুটা কার্বলিক অ্যাসিড এনে ওই র্যাট স্নেকের উপর ঢেলে দেয়। এরপরই বিষের জ্বালায় জ্বলতে থাকে সাপের শরীর। ছটফট করতে থাকে। ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা নিয়ে বাড়ির তুলসী মঞ্চের কাছে ঠাঁই নেয়। সেখানে একেবারে নেতিয়ে পড়ে ওই সাপ। এরপরই খবর দেওয়া হয় পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরীকে।
বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী বলেন, “ওই গৃহকর্ত্রী টেলিফোন আমাকে সব খুলে বলেন। সাপটির কোনও ক্ষতি হোক তা তিনি চাননি। তাই সাপটি ক্রমাগত নিস্তেজ হয়ে পড়ছে বুঝতে কাঁদতে শুরু করেন। আমিও বুঝতে পারি সাপটির বিষক্রিয়া হয়েছে। এরপর আমি দ্রুত বাইক চালিয়ে আশোকনগরে গিয়ে পৌঁছই। আমার অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করে ওই বাড়িতেই প্রথমে তাকে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করাই। এরপর মাউথ টু মাউথ রেস্পিরেশন দিই। তারপর সারা শরীরে বরফ ঘষে দিই। প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ নজরে রাখি। প্রায় ৬ ঘণ্টা এভাবে থাকার পর অবশেষে সাপটি নড়াচড়া শুরু করে।” স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার পরই সাপটিকে খোলা জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হয়।